• শিক্ষকের দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ পড়ুয়াদের
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: পডুয়া রয়েছে। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। যার জেরে পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে নলহাটির ইন্দ্রডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রতিবাদে শুক্রবার পডুয়াদের সঙ্গে নিয়ে নলহাটির চামটিবাগান মোড়ের কাছে রানিগঞ্জ মোড়গ্রাম জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন অভিভাবকরা। তাঁদের দাবি, স্কুলে দু’জন স্থায়ী শিক্ষক দিতে হবে। অবরোধের জেরে সড়কের দু’ধারে প্রচুর যানবাহন ও যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে পড়ে। ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন সাধারণ মানুষ। প্রায় ৪৫ মিনিট পর পুলিস এসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। যদিও যান চালাচল স্বাভাবিক হতে আরও একঘণ্টা সময় লেগে যায়। 

    পড়াশোনা যে হচ্ছে না তা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষিকা অনিতা সিনহা বলেন, আশপাশের কয়েকটা গ্রামের মধ্যে সরকারি প্রাইমারি স্কুল এই একটিই। আগে খুব ভালো পড়াশোনা হতো। বর্তমানে শিক্ষকের অভাবে সেটা হচ্ছে না। অভিভাবকরা বহুবার আমাকে অভিযোগ জানিয়েছেন। শিক্ষক চেয়ে এসআইয়ের মাধ্যমে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে জানিয়েছি। বর্তমানে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ আমাকেই করতে হয়। আর স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় আমি প্রয়োজনে ছুটি নিতে পারি না। দুজন স্থায়ী শিক্ষক দরকার।  

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক বলেন, ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা ছাড়াও অস্থায়ী একজন শিক্ষক রয়েছেন। এটা ঠিক যে, ওই স্কুলে দুজন স্থায়ী শিক্ষকের প্রয়োজন। কিন্তু নতুন করে নিয়োগ ছাড়া তো সেটা সম্ভব নয়। আন্দোলনরত অভিভাবকদের দাবি, এমনও স্কুল রয়েছে যেখানে পডুয়ার অনুপাতের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। সেখান থেকে শিক্ষক দিলেই তো সমস্যা মিটে যায়। 

    ইন্দ্রডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল লাগোয়া নতুনগ্রাম, কোড্ডা, চামটিবাগান, ইন্দ্রডাঙা সহ প্রায় সাতটি গ্রামের পড়ুয়ারা। একটা সময়ে স্কুলে তিনজন স্থায়ী শিক্ষক, শিক্ষিকা ছিলেন। মাস সাতেক আগে দু’জন প্রধান শিক্ষক হয়ে অন্য স্কুলে চলে যান। পরে ডেপুটেশনে একজন শিক্ষককে দেওয়া হয়। বর্তমানে স্কুলে ৮৭ জন পডুয়া। প্রধান শিক্ষিকাকে অফিসিয়াল কাজ থেকে শুরু করে মিড ডে মিল পর্যন্ত দেখাশোনা করতে হয়। বাকি একজন অস্থায়ী শিক্ষকের পক্ষে পাঠদান সম্ভবপর হচ্ছে না। নিয়মানুযায়ী এই স্কুলে ৩০ জন পড়ুয়া পিছু একজন শিক্ষক থাকার কথা। অথচ স্থায়ী শিক্ষক একজনই। পড়াশোনা হচ্ছে না বলে দাবি করে এদিন পডুয়াদের সঙ্গে নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে চামটিবাগান মোড় পর্যন্ত মিছিল করে এসে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন অভিভাবকরা। তপতী মণ্ডল নামে এক অভিভাবক বলেন, সাতমাস থেকে স্কুলে বাচ্চাদের পড়াশোনা হচ্ছে না। আর প্রাইভেট স্কুলে বাচ্চাদের পড়ানোর আর্থিক সামর্থ্যও আমাদের নেই। তাই কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আমরা সকল অভিভাবক একত্রিত হয়ে সড়ক অবরোধ করেছি। আমাদের দাবি, অবিলম্বে দুজন স্থায়ী শিক্ষক দিতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)