• কাকড় শিংয়ে ৫০০ বছর ধরে চতুর্ভূজা চণ্ডী রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন দুর্গা
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কালিয়াগঞ্জ: মা দুর্গা দেবী চণ্ডী রূপে পূজিতা হন হেমতাবাদে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের পাশে কাকড় শিংয়ে দেবী চণ্ডীর পুজো হয়ে আসছে। 

    বাংলাদেশের রাজশাহী জমিদাররা এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন প্রায় ৫০০ বছর আগে। এখন এই পুজোর দায়িত্বে হেমতাবাদের দেবশর্মা পরিবার। বংশ পরম্পরায় এই পুজো করছে পরিবারটি। তাদের সঙ্গে মিলেমিশে পুজো করেন স্থানীয়রাও।  দেবশর্মা পরিবারের সদস্য অর্জুন বলেন, বাংলাদেশের রাজশাহী জমিদারের কাছ থেকে আমাদের দেবশর্মা পরিবার এই পুজোর দায়িত্ব নেয়। এখন সেই পরিবারের ৭ শরিক মিলে পুজো করি। দেশ-বিদেশের মানুষ এই পুজোয় আসেন।  এখানকার মূর্তিতে রয়েছে বিশেষত্ব। এখানে মা দুর্গা দেবী চণ্ডী রূপে পূজিতা। ১০ হাতের পরিবর্তে থাকে চারহাত। দু’হাতে ত্রিশূল, এক হাতে খর্গ এবং অন্যহাতে চক্র থাকে। দেবীর বাহন সিংহই। লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিককে নিয়ে একচালা প্রতিমায় দেবীর পুজো হয়। পুজোর খরচ ভক্তরাই জোগাড় করে থাকেন। প্রতিমা তৈরি হয় মন্দিরেই। দশমীতে শুধু ঘট বিসর্জন হয়। সারাবছর দেবীর প্রতিমা মন্দিরে রেখে পুজো করা হয়। পরের বছর পুজোর একমাস আগে সেই প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে ওই কাঠামোতেই নতুন প্রতিমা তৈরি হয়। পুজো কমিটির সদস্য গয়ানাথ দেবশর্মা জানান, মন্দিরের নামে ৭-৮ বিঘা জমি রয়েছে। রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে আগে জঙ্গলের মধ্যেই দেবীর পুজো হত। পরে মাটির ও দোচালা মন্দির ছিল। ২০১৮ সালের পর পাকা মন্দির তৈরি হয়। মহালয়ার পর থেকেই এলাকায় মানুষ নিরামিষ খান। দশমী পর্যন্ত চলে পুজো। 

    মন্দির চত্বরে মেলাও বসে। আগে বলিপ্রথা থাকলেও করোনার সময় থেকে তা বন্ধ রয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। নবমীতে খিচুড়ি ভোগ বিতরণ হয়। দশমীর পরে অষ্টমঙ্গলা পুজো হয়।
  • Link to this news (বর্তমান)