কর্মবিরতির জের, সাপে কাটা তরুণীর মৃত্যুর অভিযোগ এন আর এসে
বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে সাপের কামড় খাওয়া এক তরুণীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরেই মৃত্যুর অভিযোগে সরব হন ধুলাগড়ের বাসিন্দা বিশেষভাবে সক্ষম ওই তরুণীর বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগ, প্রথমে রেফারের পর রেফার, তারপর জুনিয়র ডাক্তারহীন হাসপাতাল। দুইয়ের বলি হলেন প্রতিবন্ধী মেয়েটি। বাড়ির লোকেদের বক্তব্য, আফসোতুন খাতুন নামে বছর ছাব্বিশের ওই তরুণীর অবস্থা যখন খুবই আশঙ্কাজনক, তখন ওয়ার্ডে কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। এদিন বেলা ৩ টে ১০ মিনিট নাগাদ মারা যান আফসোতুন। এদিকে, কোচবিহারের বাসিন্দা ৫ বছরের মুসকান খাতুনের অবিলম্বে হার্টের অপারেশন দরকার হলেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে সেই অপারেশন হচ্ছে না। এমনকী কবে হবে, সেই কথাও বাড়ির লোকজনকে জানানো হচ্ছে না। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে এই অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির প্রথম এক মাসেই প্রায় সাড়ে ৬ হাজার অপারেশন বাতিল হয়েছে। এমন তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্যদপ্তরের অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যানে। যে কয়েকটি বিভাগের রোগীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছেন, তার মধ্যে সর্বাগ্রে আছে কার্ডিওলজি এবং কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগ। এই দু’টি বিভাগে অপারেশনে দেরি হলে জীবন সঙ্কট হতে পারে বলে মনে করেন খোদ চিকিৎসকরাই। এদিন এই দু’টি গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল এন আর এসের অধ্যক্ষ ডাঃ পীতবরণ চক্রবর্তীকে। তিনি বলেন, ‘খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’ আফসোতুনের জামাইবাবু শেখ রফিক আলি বলেন, ‘শনিবার সাপে কাটে আফসোতুনকে। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় গাববেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রেফার করে দেওয়া হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হলেও চিকিৎসকরা ভর্তি নেননি। আমাদের অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের চেষ্টায় হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ আবার রেফার করে দেয়। রাত ৮টা নাগাদ আমরা এন আর এস মেডিক্যাল কলেজে ওকে ভর্তি করি। রাতে আফসোতুনের ডায়ালিসিস করা হয়নি। সকালবেলা আমাদের বলা হয়, ওর ডায়ালিসিস করবার মতো অবস্থা নেই। অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়। খুব কষ্ট পাচ্ছিল। অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় চিকিৎসকের খোঁজ পড়ে। কিন্তু ওয়ার্ডে সেই সময় কোনও ডাক্তার ছিলেন না।’ এরপরই মৃত্যু হয় তরুণীর। বাড়ির লোকজন দুপুরে জানান, তাঁরা চিকিৎসায় গাফিলিতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।