• সাদা কাগজে সই! আদালতে ধাক্কা এজেন্সির, নারকো টেস্ট হবে না সঞ্জয়ের
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি,কলকাতা: বড় ভরসা ছিল নারকো টেস্ট। সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা আশা করেছিলেন, এখান থেকেই ঘুরে যাবে মামলার মোড়।  লালবাজারের তদন্ত প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু তাঁদের আশায় জল ঢেলে দিল খোদ আদালত। স্পষ্ট জানিয়ে দিল, আর জি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় ধৃত সিভিক সঞ্জয় নারকো পরীক্ষার জন্য ‘কনসেন্ট’ দেয়নি। তাই এজেন্সির আবেদন খারিজ করে দিচ্ছে শিয়ালদহ আদালত। অথচ প্রথমে জানা যাচ্ছিল, সঞ্জয়ের নারকো টেস্টে আপত্তি নেই। কিন্তু বিতর্ক তৈরি হয় সিবিআইয়েরই পদক্ষেপে। বিচারককে সঞ্জয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে তাকে দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। কী মতলবে এই কাজ? শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

    সুপ্রিম কোর্টের স্টেটাস  রিপোর্টে এজেন্সি জানিয়েছে, তদন্তে নতুন দিশা মিলেছে। কিন্তু কী সেই পথ? জানে না কেউ। ৯ সেপ্টেম্বরের পর সিবিআইয়ের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে অনেকটাই। তা দেখে সিবিআইয়েরই একাংশ বলছে, সত্যি কিছু আছে তো? নাকি মুখরক্ষার চেষ্টা? দেশের শীর্ষ আদালতে আগামী মঙ্গলবার নতুন স্টেটাস রিপোর্ট জমা পড়বে। তাই চাপে থাকা সিবিআই এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে লালবাজারের হাতে আসা তথ্য-প্রমাণের বাইরে নতুন কিছু জোগাড়ে। জিজ্ঞাসাবাদ, তল্লাশি, পলিগ্রাফ—সবই হয়েছে। কিন্তু ব্রেক-থ্রু নেই। নতুন তথ্য ও নথি কিছু না থাকলে সুপ্রিম কোর্ট যে ছেড়ে কথা বলবে না তা টের পাচ্ছেন এজেন্সির শীর্ষকর্তরা। সঞ্জয় বারবারই তদন্তকারীদের জানিয়ে গিয়েছে সে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত নয়। তাহলে কে? এই প্রশ্নের উত্তর তার কাছ থেকে বের করতে ব্যর্থ এজেন্সি। অস্ত্র হিসেবে তাই বেছে নেওয়া হয়েছিল নারকো টেস্টকে। সেইমতো বৃহস্পতিবার আবেদন করা হয় শিয়ালদহ আদালতে। শুক্রবার সম্মতি নেওয়ার জন্য সঞ্জয়কে আনা হয় কোর্টে। বিচারকের চেম্বারে সে লিখিতভাবে বক্তব্য জানিয়ে যায়। খোলা এজলাসে এই নিয়ে শুনানি শুরু হলে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, অভিযুক্তকে তাঁরা গুজরাতে নিয়ে যেতে চান নারকো টেস্টের জন্য। কারণ, এখানে কোনও ল্যাবরেটরি নেই। যদিও লিগ্যাল এইডের আইনজীবী কবিতা সরকার বলেন, তাঁর এই পরীক্ষায় সম্মতি নেই। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মক্কেলকে দিয়ে বৃহস্পতিবার একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর মুখবন্ধ খাম খুলে বিচারক বলেন, সঞ্জয়ের নারকোতে সম্মতি নেই। তিনি ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টে কর্ণাটক সরকার বনাম সেলভি মামলার রায় উল্লেখ করে বলেন, কারও অনুমতি ছাড়া নারকো টেস্ট অসাংবিধানিক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা বিরোধী। এরপরই তিনি এজেন্সির আবেদন খারিজ করে দেন। এখন নারকো টেস্টের জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ব্রেন ম্যাপিংয়ের তোড়জোড়। যদি সেটাও না হয়, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের গোপন জবাববন্দির পথে এজেন্সি হাঁটবে বলে সূত্রের খবর। কারণ, এই সঞ্জয়ই তাদের শিবরাত্রির সলতে। নার্সের থেকে পাওয়া ভিডিও এবং তাদের অন্যান্য ফর্মুলা প্রমাণ করতে গেলে দ্রুত আরও এক-দু’জনকে গ্রেপ্তার করতে হবে। মঙ্গলবারের আগেই।
  • Link to this news (বর্তমান)