এই সময়, মালদা: যুবক-খুনে নাম ওঠার পরে গা-ঢাকা দিয়ে লুকিয়ে ছিলেন দিল্লিতে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হলো না। মালদা জেলা পুলিশের কাছে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে কালিয়াচকের ‘ত্রাস’ হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা আসাদুল্লাহ বিশ্বাসকে। হাইকোর্টের নির্দেশে মালদা জেলায় প্রবেশে তাঁর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কী ভাবে নিজের গ্রামে বসে এক যুবককে পিটিয়ে মেরেছিলেন, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।গত অগস্ট মাসের ১৮ তারিখ কালিয়াচক থানার মোজামপুরে আহেদুল শেখ নামে এক যুবক গণ পিটুনিতে মারা যান। জানা যায়, যুবকটি অপরাধ ছিল সামান্য একটা বিষয় নিয়ে তিনি আসাদুল্লাহর মুখে মুখে তর্ক করেছিলেন! ঘটনার তদন্তে নেমে সিসিক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ মোট ১৪ জনকে শনাক্ত করে। তার মধ্যে আসাদুল্লাহ বিশ্বাস, তাঁর ছেলে, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে মদ খাওয়ার সময়ে দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, কালিয়াচক থানার তদন্তকারীরা খবর পান আসাদুল্লাহ দিল্লিতে রয়েছেন। এর পর মালদা পুলিশের পক্ষ থেকে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
আসাদুল্লাহকে ট্রানজিট রিমান্ডে মালদায় নিয়ে আসতে কালিয়াচক থানার পুলিশ দিল্লি রওয়ানা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘ওঁর বিরুদ্ধে, কালিয়াচক থানায় আগুন লাগানো, একাধিক খুন ও খুনের চেষ্টার ঘটনা, জাল টাকা, মাদকের কারবার, সন্ত্রাস মূলক অপরাধ সহ এই জেলাতেই প্রায় পঞ্চাশটি কেস রয়েছে। তবে এ বার ওঁকে ধরা হয়েছে গণপিটুনিতে খুনের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে।’
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে এনআইএ আসাদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। তার আগে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আসাদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। এমনকী হাইকোর্টের নির্দেশ তাঁর জেলায় ঢোকার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি ওসবের তোয়াক্কা না করে মাঝেমধ্যেই নিয়মিতই বাড়িতে আসতেন।
আসাদুল্লাহ তৃণমূলের কোনও সাংগঠনিক পদে নেই। তবে তিনিই কালিয়াচকে তৃণমূলের শেষ কথা। যদিও শাসকদলের জেলা মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু বলেন, ‘তৃণমূল যে পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করে না সেটা আসাদুল্লাহ বিশ্বাসের গ্রেপ্তারে বড় প্রমাণ।’