• গভীর নিম্নচাপে দক্ষিণবঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা
    এই সময় | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: ২৬ সেপ্টেম্বর ২৫৯.৫, ২৭ সেপ্টেম্বর ২২৩.৯ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর ৩৬৯.৬ মিলিমিটার — সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ৮৫৩ মিমি বৃষ্টির ভয়াবহ অভিজ্ঞতা রয়েছে কলকাতার। ১৯৭৮ সালের সেই ঘটনার পর ৪৬ বছর পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের ওই ভয়াবহ দিনগুলো ভোলেনি বাংলা। এই কারণেই ২০২৪-এর ১১ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের উপর তৈরি নিম্নচাপ ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ লক্ষ্য করে এগোতে শুরু করায় মৌসম ভবনের অস্বস্তি বাড়ছিল। শেষ পর্যন্ত কতটা বৃষ্টি নামাতে পারে ওই নিম্নচাপ?শুক্রবার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ওই নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট নিম্নচাপের চেহারা নেওয়ার পর আরও শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আজ, শনিবার সেটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবে। এর প্রভাবে আজ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ‘চরম ভারী’, ‘অতিভারী’ এবং ‘ভারী’ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

    দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটা জেলাতেই বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর মধ্যে বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের কিছু কিছু জায়গায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি অর্থাৎ ‘চরম ভারী বৃষ্টির’ লাল সতর্কতা জারি করেছেন আবহবিদরা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অর্থাৎ ‘অতিভারী’ বৃষ্টির কমলা সতর্কতা রয়েছে কলকাতা-সহ পাঁচ জেলায়।

    এই তালিকায় রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলির নামও। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত ‘ভারী’ বৃষ্টির হলুদ সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। আবহবিদদের আশঙ্কা, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির প্রাবল্য এতটাই বেশি হতে পারে যে মাত্র এক ঘণ্টায় ২০ থেকে ৩০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি নামতে পারে। বাংলার উপকূলের প্রায় দোরগোড়ায় যেখানে এখন নিম্নচাপটি অবস্থান করছে, সেখানে প্রায় ৭.৬ কিলোমিটার পুরু হয়ে মেঘের স্তর জমেছে।

    এই কারণেই বৃষ্টির প্রাবল্য নিয়ে চিন্তায় মৌসম ভবন। প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জোরালো বাতাস বয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তাও জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতায় বাতাসের বেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে যে নিম্নচাপটি বাংলা ও ওডিশার উপর দিয়ে এগিয়েছিল, সেটি এখন উত্তরপ্রদেশের উপর অবস্থান করছে।

    সেখান থেকে রাঁচি এবং বাঁকুড়ার উপর দিয়ে একটি মৌসুমি অক্ষরেখা বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এই কারণেই বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরেও প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির (আইআইটিএম) তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে কলকাতায় গড় বৃষ্টির পরিমাণ ৩১০.৭ মিমি।

    কিন্তু গত ১০ বছরে শহর এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি পেয়েছে এমন নজির মাত্র তিনবার — ২০১৪-তে ৩২২.১ মিমি, ২০২১-এ ৬১৩.৮ মিমি এবং ২০২৩-এ ৪৩৩.৩ মিমি। এ বছর সেপ্টেম্বরে কলকাতা এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩১.৮ মিমি বৃষ্টি পেয়েছে। ঘনিয়ে আসা নিম্নচাপের দৌলতে সামনের কয়েক দিনে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ কতটা বৃষ্টি পায়, সেই দিকেই নজর থাকবে আবহবিদদের।
  • Link to this news (এই সময়)