এই সময়: রেশন দুর্নীতি মামলায় সক্রিয়তা বাড়াল ইডি। শুক্রবার সকালে কলকাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার মোট সাতটি জায়গায় তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা।এদিন কলকাতার ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়া এলাকায় এক রাইস মিল মালিকের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর। আরেকটি দল পৌঁছে যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা এলাকায় ধনেশ্বরপুরে। সেখানে বেলা ১২টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে চাল ব্যবসায়ী স্বদেশকান্তি বেরার বাড়ি ঘিরে ফেলেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
ওই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না তিনি। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাজার থেকে ফিরে এলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সাতজনের ওই দলটি বেলদায় বিকেল পর্যন্ত তল্লাশি চালায়। সূত্রের খবর, স্বদেশকান্তির সঙ্গে খাদ্যদপ্তরের যোগসাজশ ছিল। রেশন দুর্নীতির নথিপত্র থেকে ওই ব্যবসায়ীর নাম জানা গেলেও এদিন তিনি বলেন, ‘করোনার পর থেকে সে ভাবে ব্যবসা চলত না। আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা।’
অন্যদিকে, নদিয়ার কল্যাণীতে এক ফুড ইন্সপেক্টরের বাড়িতেও এদিন তল্লাশি চলে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কল্যাণী ‘এ’ ব্লকের পাঁচেরপল্লির বাসিন্দা ফুড ইন্সপেক্টর সালমা হেমব্রমের বাড়িতে হাজির হয় ইডি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে সেখানে তল্লাশি চলে।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। যদিও তিনি এখন জামিনে মুক্ত। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে এদিনের অভিযান বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, সালমা হেমব্রম অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি। ফলে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন আধিকারিকরা।
এদিন জয়নগরের ১ নম্বর ব্লকের বহড়ু বাজারে এমআর ডিস্ট্রিবিউটর-এর মালিক সুস্মিতা ঘোষের গোডাউনে হানা দেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। এর পর বাজারের কাছাকাছি সেনপাড়াতে তাঁর বাপের বাড়িতেও যান তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, সুস্মিতা থাকেন কলকাতায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর ব্যবসা দেখভাল করেন স্বামী বরুণ ঘোষ ওরফে বাবুয়া। ইডি হানার খবর পেয়ে কাগজপত্র সহ সুস্মিতাকে নিয়ে কলকাতা থেকে বহড়ুর অফিসে চলে আসেন তিনি। অন্যদিকে, এদিনই বাসন্তীর সাত নম্বর সোনাখালি গ্রামে সরকারি চালের গোডাউনেও যায় ইডির আরেকটি দল। ডিস্ট্রিবিউটর রাধাকৃষ্ণ রায়কে কাগজপত্র নিয়ে তলব করা হয়। সেখানেও চলে তল্লাশি।
একই সঙ্গে দেগঙ্গার আজিজনগর এলাকায় একটি সমবায় সমিতি এবং ব্যাঙ্কে হানা দেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই সমিতির মাধ্যমে রেশনের বিভিন্ন সামগ্রী বেচাকেনা হতো। এদিন, বারাসতের খাদ্য দপ্তরের এক আধিকারিকের ফ্ল্যাটেও এদিন অভিযান চলে বলে সূত্রের খবর।