'লাইভ হোক...', আন্দোলনকারী ডাক্তারদের চাপে ফেলতে এবার নয়া দাবি কল্যাণের
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক ভেস্তে যায় লাইভ সম্প্রচার করার ইস্যুতে। সরকার পক্ষের দাবি ছিল, বিচারাধীন মামলা নিয়ে আলোচনার লাইভ স্ট্রিমিং করা সম্ভব নয়। তবে চিকিৎসকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন। আর এই সবের মাঝেই আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবার দাবি করলেন, এরপর থেকে যখন চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করবেন, স্বচ্ছতার জন্যে সেটারও যেন লাইভ স্ট্রিমিং হয়। একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কিছু চিকিৎসক লাইভ স্ট্রিমিংয়ের বিষয়ে খুবই উৎসাহী। ভবিষ্যতে আমরা তাহলে সার্জারির লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি জানাব। অপারেশনে যাতে আরও স্বচ্ছতা আসে, তার জন্যেই এটা করা উচিত।'
প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর নাকি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্যে প্রায় ২ ঘণ্টা নবান্ন সভাঘরে অপেক্ষা করছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেদিন নবান্নের দুয়ারে চলে এসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শেষ পর্যন্ত লাইভ স্ট্রিমিং না হওয়ায় বৈঠকও হল না। কার্যত নবান্ন সভাঘরের বাইরে 'অবস্থানে' বসে পড়েন চিকিৎসকরা। এদিকে বৈঠক না হওয়ায় জট কাটার সম্ভাবনাও কমেছে। অপরদিকে অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের। সেই পরিস্থতিতে এবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে পালটা দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা হচ্ছে ঘটনাটিকে। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের এই প্রতিবাদকে ভাঙতে তাতে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। এরই পাশাপাশি বিজেপির সঙ্গেও তুলনা টানা হচ্ছে মমতার।
এই আবহে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ফাঁকা সভাঘরে বসে থাকা মমতার ছবি পোস্ট করেছিল তৃণমূল। তৃণমূল এক্স হ্যান্ডেলে সেই পোস্টে লিখেছে, আপনি কি কখনও দেখেছেন, বিজেপির কোনও সিএম প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ১.৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন? একেবারেই নয়। জেএনইউ থেকে কৃষকদের প্রতিবাদ, কুস্তিগীরদের প্রতিবাদ থেকে মণিপুর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর বিজেপি গণতান্ত্রিক আলোচনার প্রতি কোনও দিন সম্মান দেখায়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের এই ফারাকটা বোঝা দরকার, ইতিহাসের সঠিক দিকে দাঁড়ান।
এদিকে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে কী 'সমস্যা' ছিল তা জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, টেলিকাস্টের ব্যাপারে ওপেন মাইন্ডেড আমরা। কিন্তু বিচারাধীন বিষয়ে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হয়। সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিয়ে যদি আমরা হঠাৎ করে টেলিকাস্ট করি, কেউ যদি হঠাৎ কোনও মন্তব্য করেন যা আগে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্যের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তাহলে আমার কি দায়বদ্ধতা থাকবে না? আমাদের অফিসারদের কি দায়বদ্ধতা থাকবে না? আমরা এমন কিছু করতে চাইনি যাতে অচলাবস্থা দূর না হয়।
মমতা বলেন, আমরা স্বচ্ছতার জন্য ভিডিয়োগ্রাফির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমরা বিচারাধীন মামলা নিয়ে আলোচনার লাইভ টেলিকাস্ট করতে পারি না। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে আমরা লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারি না। আমরাও চাই নির্যাতিতা বিচার পাক।কিন্তু মামলা আমাদের হাতে নেই। আমরা ডাক্তারদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে আলোচনায় রাজি ছিলাম। বিচারাধীন মামলার কারণেই লাইভ সম্প্রচারে সমস্যা আছে। দুঘণ্টা অপেক্ষার পরে ডাক্তাররা আসেননি। তার পরেও আমরা কোনও পদক্ষেপ করব না। ওরা ছোট, তাই ক্ষমা করে দেব। আমি তিনবার চেষ্টা করলাম। সেই সঙ্গেই মমতা পালটা তোপ দেগে বলেছিলেন, ওরা বিচার নয় চেয়ার চায়।