আর জি কর-কাণ্ডের আবহে এ রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তা যখন বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে, তখন মেয়েদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই একটি অ্যাপ আনতে চলেছে পুলিশ। সেই অ্যাপের প্যানিক বাটনে ক্লিক করলেই বিপদে পড়া মহিলার নাম-ধাম ও ভৌগোলিক অবস্থান পৌঁছে যাবে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে।
ধরা যাক, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন কোনও মহিলা, কিংবা বাড়িতে একাই রয়েছেন। সেই সময়ে হয়তো হঠাৎ কোনও দুষ্কৃতী আক্রমণ করল, অথবা আচমকাই এমন কোনও বিপদ দেখা দিল, যা থেকে নিস্তার পেতে পুলিশকে ডাকা দরকার। তখন হাতে ধরা মোবাইল ফোনের নির্দিষ্ট একটি অ্যাপ খুলে তাতে থাকা প্যানিক বাটনে ক্লিক করলেই হবে। সেই মহিলার বিপদবার্তা পৌঁছে যাবে পুলিশের নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুমে। সেখানকার মনিটরে ফুটে উঠবে বার্তা প্রেরকের বিস্তারিত তথ্য। যা দেখে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবেন পুলিশকর্মীরা।
আগামী কিছু দিনের মধ্যেই নতুন এই ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হতে চলেছে রাজ্যে। ফোন করার বদলে শুধুমাত্র অ্যাপ ব্যবহার করেই সাহায্য চাইতে পারবেন যে কেউ। পুলিশ সূত্রের খবর, বর্তমানে ওই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা সংক্ষেপে অ্যাপ তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নারী শক্তি’। বিপদে পড়া নাগরিকদের সাহায্যে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতেই এই অ্যাপ আনছে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশ। পুজোর আগেই অ্যাপটি চলে আসবে বলে সূত্রের খবর। নাম ‘নারী শক্তি’ হলেও এই অ্যাপ পুরুষেরাও ব্যবহার করতে পারবেন।
কী ভাবে কাজ করবে ‘নারী শক্তি’?
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ওই অ্যাপের সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ভবানী ভবনের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স সার্ভিস সিস্টেম’ বা ‘ইআরএসএস’ কন্ট্রোল রুমের যোগ থাকবে। কোনও জেলায় কেউ বিপদে পড়ে ওই অ্যাপের প্যানিক বাটন টিপে সাহায্য চাইলে ভবানী ভবনের কন্ট্রোল রুমে সঙ্গে সঙ্গে সেই বার্তা পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে খবর পেয়ে সাহায্যের জন্য পৌঁছে যাবে পুলিশ। অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে ওই অ্যাপ। শহরের কোথাও কেউ বিপদে পড়লে তিনিও একই ভাবে ওই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। বিপদে পড়া ব্যক্তির ভৌগোলিক অবস্থান দেখে সেখানে চলে যাবে পুলিশের গাড়ি।
লালবাজার সূত্রের খবর, নতুন এই ব্যবস্থায় বিপদে পড়া ব্যক্তিকে শুধু অ্যাপের প্যানিক বাটন টিপতে হবে। তার পরে বাকি কাজ পুলিশের করার কথা। বিপদে পড়ে যিনি প্যানিক বাটন টিপছেন, তাঁর নাম-ধাম ও ভৌগোলিক অবস্থান— সব কিছুই চলে আসবে কন্ট্রোল রুমের পর্দায়। যা দেখে রাস্তায় থাকা কলকাতা পুলিশের পিসিআর ভ্যানকে সরাসরি ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে, কত ক্ষণের মধ্যে পুলিশের সাহায্যকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছবে, তা নির্ধারিত না হলেও এক পুলিশকর্তা জানান, বর্তমানে ১০০ ডায়ালে ফোন করে কেউ সাহায্য চাইলে কলকাতা পুলিশ খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।