এই সময়, বাগনান ও খানাকুল: মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তার সঙ্গে ঘন ঘন বাজের শব্দ। শুক্রবার দুপুরে তখন ক্লাস চলছিল স্কুলে। আচমকা স্কুলের খুব কাছে বাজ পড়ার শব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ে খানাকুল কুমারহাট হাইস্কুলের সাতজন ছাত্রী। তড়িঘড়ি তাদের খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে বাগনানের বাইনান উচ্চ বিদ্যালয়েও। সেখানেও বাজ পড়ায় স্কুলের মধ্যেই পাঁচ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার মধ্যে একজনের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তবে তাদের স্কুলেই শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন শিক্ষকরা।
খানাকুলের ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ক্লাস চলাকালীন স্কুল চত্বরে বাজ পড়ে। ঘন ঘন বাজ পড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে স্কুলের একাধিক ছাত্রী। এদের মধ্যে সাত জন বেশি অসুস্থ বোধ করায় তাদের তড়িঘড়ি শিক্ষকরা খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। খবর দেওয়া হয় অসুস্থ ছাত্রীদের বাড়িতেও।
খানাকুল থানার পুলিশ, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও হাসপাতালে পৌঁছন। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আলিফা মাসুদ, উষা দোলুই, শাবানা খাতুন, রশিদা পারভিন, তালহা আক্তার, শিপ্রা সিংহরায় ও আসরিন আফরোজাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। সন্ধ্যার পর একজনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে আরামবাগ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
শিক্ষকরা জানান, এ দিন বৃষ্টির সঙ্গে ঘন ঘন বাজ পড়ায় কেঁপে ওঠে স্কুল চত্বর। ছাত্রীরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। অনেকেই অসুস্থ বোধ করে। তার মধ্যে ওই সাত ছাত্রীকে হাসপাতালে আনতে হয়। বাকিদের স্কুলেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।
খানাকুল ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক কৌশিক কীর্তনিয়া বলেন, ‘ছাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। একজনকে আরামবাগ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।’ কুমারহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার ঘোষ বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। ঘন ঘন বাজ পড়ে। স্কুল চত্বরেও বাজ পড়ে। ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘ছাত্রীরা আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।’ এক অভিভাবক মাকসুদুল হক বলেন, ‘এটা নিছক দুর্ঘটনা। কারও কিছু করার নেই। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার ঘোষ ও অন্য শিক্ষকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।’
অন্যদিকে, এ দিন দুপুরে বাজ পড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে বাগনান থানার বাইনান উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচজন ছাত্রী। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তবে স্কুলেই শিক্ষকরা তাদের শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন। অভিভাবকদের খবর পাঠানো হলে তাঁরা এসে ছাত্রীদের বাড়ি নিয়ে যান।
প্রধান শিক্ষিকা সীতা নায়েক বলেন, ‘আমার কর্মজীবনে এমন ঘটনা কোনও দিন ঘটেনি। এত ঘন ঘন বাজ পড়ছিল, তার সঙ্গে বৃষ্টি। এর জেরেই ছাত্রীরা অসুস্থ বোধ করতে থাকে। একসঙ্গে এতজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় শিক্ষকরাও অবাক হয়ে যান।’