আজ আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যভবনের সামনের ধরনামঞ্চে। সেখানে তিনি ডাক্তারদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। পরে তিনি ফিরে গেলে অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে কি আন্দোলনের এখানেই ইতি। তবে আন্দোলনকারী ডাক্তারবাবুরা জানিয়ে দিলেন, আন্দোলন আগের স্পিরিট মেনেই চলবে। পাশাপাশি তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগতে সাধুবাদ জানান। কিন্তু চিকিৎসক আন্দোলনের অন্যতম 'মুখ' ডঃ অনিকেত মাহাতো বলেন, 'দাবির সঙ্গে আপস নয়'। তাঁর কথায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান ডাক্তাররা। ডাক্তারদের স্পষ্ট বক্তব্য, তাঁরা ইস্যু ধরে ধরে পাঁচ দফা দাবিতে আলোচনা করবেন।
উল্লেখ্য, আজ আচমাই ডাক্তারদের ধরনামঞ্চে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বলেন, 'কাল সারারাত ঘুমোতে পারিনি। আমারও কষ্ট হয়েছে। আপনারা যেভাবে বসে আছেন, তাতে আমার মানসিকভাবে কষ্ট হচ্ছে। ৩৩-৩৪ দিন আমিও রাতের পর রাত ঘুমোইনি। আপনারা যখন রাস্তায় থাকেন আমাকেও পাহারাদার হিসেবে জেগে থাকতে হয়।' পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা কাজে যোগ দিন। আমি আপনাদের দাবিগুলো দেখব। আমি একা সরকার চালাই না। আমি অফিসারদের সঙ্গে কথা বলব। আমাকে একটু সময় দিন। আপনাদের প্রতি আমি কোনও অবিচার করব না। কাজে ফিরুন। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। আমি সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব। জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স ও পুলিশ থাকবে তাতে। আরজি কর সহ সব কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম।'
মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা রাজ্যের অভিভাবক। তাই তিনি যে কোনও জায়গায় আসতে পারেন। তিনি যে ধরনা মঞ্চে এসেছেন, সেটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তাঁকে সাধুবাদ জানানো হচ্ছে। কিন্তু অভিভাবক হিসেবে আজ যে দৃষ্টিভঙ্গি দেখালেন, তা আগের ৩৪ দিনে দেখা যায়নি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা আরও জানান যে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বৈঠক করতে ডাকবেন, সেখানেই তাঁরা যাবেন। মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় বসার কথা বলছেন। সেটাই বলছেন জুনিয়র ডাক্তাররাও। কিন্তু তাঁদের পাঁচ দফা দাবি মানতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেইসঙ্গে নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরই বৈঠক করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যাঁরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ‘জাস্টিস’ চাইছেন। রয়েছে আরও কয়েকটি দাবি।