পেটের টানে দুর্যোগ মাথায় নিয়ে মাছ ধরতে বেরনোই কাল! বাজ পড়ে মৃত ১
প্রতিদিন | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: সপ্তাহান্তে রাজ্যজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা ছিল। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবু পেটের টানে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন কেউ কেউ। সেই মাছ ধরার সময় বাজ পড়ে প্রাণ গেল মৎস্যজীবী। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও এক।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে সাগরের চুনফুলিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীতে নৌকায় মাছ ধরছিলেন দুই মৎস্যজীবী- আবদুস সামাদ (৪০) ও শেখ শাহজাহান। প্রচণ্ড বৃষ্টি চলাকালীন আচমকাই নৌকার উপর হয় বজ্রপাত হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সামাদের। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শাজাহান।
এদিকে গভীর নিম্নচাপের জেরে কাকদ্বীপ মহকুমার পাথরপ্রতিমা, নামখানা ও সাগর এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টিতে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন এলাকাও জলমগ্ন। মহেশতলা ও বজবজ পুর এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে রাস্তায় জমা জলে নাজেহাল বাসিন্দারা। শনিবার সকাল থেকেই নদী ও সমুদ্র প্রচন্ড উত্তাল থাকায় কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, পাথরপ্রতিমা ও নামখানার দুর্বল নদী ও সমুদ্রবাঁধগুলির উপর কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই দফায় দফায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায়। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। প্রবল বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে নামখানার হরিপুর সহ কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক মাটির বাড়ি ও দোকানঘর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপড়ে পড়ে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। নষ্ট হয়েছে পানের বরজও।
অন্যদিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ডুবে যাওয়া বাংলাদেশি ট্রলারের মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করেছেন ভারতীয় মৎস্যজীবীরা। জানা গিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থাকার কারণে এফ. বি. পারমিতা ৫ নম্বর নামক একটি ভারতীয় ট্রলার সমুদ্র থেকে উপকূলে ফিরে আসছিল। ফিরে আসার সময় ওই ট্রলারের মৎস্যজীবীরা বেশ কয়েকজনকে সমুদ্রে ভেসে থাকতে দেখেন। তাঁদের উদ্ধার করেন। পরে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের মৎস্যজীবী। এ বিষয়ে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার সময় ভারতীয় মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে ভেসে থাকতে দেখতে পান। ১২ জন মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে পাথরপ্রতিমার ফেরিঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে একজন মৎস্যজীবী নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের পাথরপ্রতিমা থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” উদ্ধার হয় মৎস্যজীবীদের রবিবার কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হবে।