• মেলেনি আবাস যোজনার টাকা, মাটির দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু বৃদ্ধার, জখম ছয়
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: আবাস যোজনায় কেন্দ্রের বঞ্চনায় আবারও বলি হলেন এক বৃদ্ধা। গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে বিষ্ণুপুরের বড়ামারা গ্রামে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। শুক্রবার রাতে কোতুলপুরে সিহড়ের কলতলা এলাকায় মাটির বাড়ি ধসে ঘুমন্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরিবারের আরও ৬ জন জখম হন। ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম রবিবালা সিং (৬৫)। ওইদিন রাত বারোটা নাগাদ পরিবারের সকলে যখন ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই সময় মাটির বাড়ির একাংশ ধসে পড়ে। তাতে রবিবালা সহ পরিবারের আরও ছয় সদস্য চাপা পড়েন। তাঁদের মধ্যে একটি ২ বছরের শিশু রয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বিষ্ণুপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। এদিকে ওই ঘটনায় আবাস যোজনায় কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে নতুন করে এলাকায় ক্ষোভ ছড়ায়। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।  

    কোতুলপুরের বিডিও দেবরাজ ঘোষ বলেন, সিহড়ে মৃতার নাম আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের পাশে রয়েছি। সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পরিবারের সদস্যদের স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে রাখা হয়েছে। শুকনো খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।  

    তৃণমূল কংগ্রেসের কোতুলপুর ব্লক সভাপতি তরুণ নন্দীগ্রামী বলেন, কেন্দ্রের আবাস যোজনার বঞ্চনার শিকার হতে হল রবিবালা সিংকে। এনিয়ে আমরা ফের আন্দোলনে নামব। 

    বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, এভাবে বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক। তৃণমূল নেতারা প্রকৃত গরিব মানুষকে বাড়ি দেয়নি। দুর্নীতি করে পাকা বাড়িওয়ালাদের নামে একাধিক বাড়ির টাকা আত্মসাৎ করেছে। দিদি তো বাংলার বাড়ি দেওয়ার কথা বলে  ফানুস উড়িয়েছিলেন। সেটা গেল কোথায়?  

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিহড়ের ওই পরিবারে দু’জন শারীরিক প্রতিবন্ধী রয়েছেন। শুক্রবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পরিবারের সকলেই যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই সময় বাড়ির একাংশ ধসে পড়ে। তাতে রবিবালা সহ আরও ছয় সদস্য চাপা পড়ে যান। রবিবালার স্বামী ও তাঁর ছেলে দোতলার যে  ঘরে ছিলেন। সেটি অক্ষত থাকায় তাঁদের আঘাত লাগেনি। তাঁরাই বাইরে বেরিয়ে এসে প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি করেন। পরে গ্রামবাসীরা এসে প্রত্যেককে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে পুলিস আসে। কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রবিবালাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।  আঘাত গুরুতর হওয়ায় মৃতার নাতবউ সোনিয়া সিংকে বিষ্ণুপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই কোতুলপুরের বিডিও দেবরাজ ঘোষ, কোতুলপুর থানার ওসি বিন্ধেশ্বর গড়াই ঘটনাস্থলে যান। শনিবার সকালে তৃণমূল নেতৃত্বরা গ্রামে গিয়ে কেন্দ্রের আবাস যোজনায় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। 

    মৃতার নাতি সুজয় সিং বলেন, আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমাদের পাকা বাড়ি হয়নি। হলে আজকে আমাদের এই অবস্থা হতো না।    -নিজস্ব চিত্র  
  • Link to this news (বর্তমান)