• বালি পাচার রুখতে সাঁড়াশি অভিযান, আটক ১৮ ট্রাক্টর
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বর্ষাকালে বালি পাচারে কড়া অবস্থান নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার প্রতিটি দিকেই ব্যাপক অভিযান চলছে। একদিনের সাঁড়া. অভিযানে দুবরাজপুরের লোবা এলাকা থেকে ১৮টি অবৈধ বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করল পুলিস, প্রশাসন। লোবা এলাকায় অজয় নদ থেকে রাতের অন্ধকারে দেদার অবৈধ বালি পাচার হওয়ার অভিযোগ সামনে আসছিল। সেই কারণে পুলিস নদীর চরে গিয়ে তা হাতেনাতে ধরল। এছাড়াও জাল চালান সমেত একটি বালিবোঝাই লরি আটক করে সদাইপুর থানার পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয় দু’জনকে।

    ক’দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল, হাজার হাজার ট্রাক্টরে করে লোবা এলাকায় অজয় থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে পাচার করা হচ্ছে। প্রথমে নদী থেকে বালি তুলে ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তারপর ইলামবাজার থানা এলাকায় বিভিন্ন ধর্মকাঁটাতে গিয়ে তা ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকেই রাতের অন্ধকারে লরি, ডাম্পারে করে লোড হয়ে বিভিন্ন দিকে পাঠানো হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অজয় নদ থেকে এক ট্রাক্টর বালি বোঝাই করতে ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি লাগে। স্থানীয় মানুষকে কাজ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বালি লোড করানো হচ্ছে। এছাড়াও গ্রামের রাস্তা ধরে সারারাত ট্রাক্টরগুলি যাতায়াত করায় তিতিবিরক্ত সাধারণ গ্রামবাসীরাও। তাঁদের অভিযোগ, হুমকি বা শাসানির ভয়ে কেউ কোনও কথা বলতে পারেন না। স্থানীয় শাসকদলের এক অঞ্চল নেতার নাম এই প্রসঙ্গে উঠে আসছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এই অভিযোগ সামনে আসছিল। শুক্রবার রাতে পুলিস ও বিএলআরও দপ্তর যৌথ অভিযান চালায় অতর্কিতেই। নদীর চর থেকে ১৮টি অবৈধ বালি বোঝাই ট্রাক্টর আটক করা হয়। যদিও পুলিসকে দেখে ট্রাক্টর ছেড়ে প্রত্যেকেই পালিয়ে যায়। 

    অন্যদিকে, সদাইপুর থানার পুলিস রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাঁধেরশোল মোড়ের কাছে একটি অবৈধ বালি বোঝাই লরি আটক করে। গ্রেপ্তার করা হয় চালককে। ওই চালকের নাম, দুলাল মিঞা। তার বাড়ি মালদার কালিয়াচকে। পাশাপাশি পুলিস বালি বোঝাই গাড়িটি ধরেছে জানতে পেরে পেছনে এক বাইক আরোহী লরিটাকে ছাড়াতে এলে পুলিস তাকেও গ্রেপ্তার করে। ধৃতের নাম শেখ সাদ্দাম। তার বাড়ি দুবরাজপুরের বোধগ্রাম। শনিবার তাদের দু’জনকে সিউড়ি আদালতে তোলা হয়। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, জেলাশাসকের নির্দেশ মতো বর্ষাকালে নদী থেকে বালি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বীরভূমের যেসব নদী থেকে বালি চুরি করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অজয় নদ থেকে বেশ কিছু জায়গায় অবৈধভাবে বালি তুলে রাস্তার ধারে ধর্মকাঁটাতে ফেলে বিক্রি করার অভিযোগ এসেছে। ইলামবাজারের বেশ কিছু ধর্মকাঁটার বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। এখন নদী থেকে বালি উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
  • Link to this news (বর্তমান)