• ভারী বৃষ্টি, ঝাড়গ্রাম ও দুই মেদিনীপুরে বিপর্যস্ত জনজীবন
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের জেরে দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলাজুড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হল। বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন। বিদ্যুৎ না থাকায় শনিবার নন্দকুমার থানার অন্তর্গত সুলোচনায় তমলুক-ময়না রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক ঘণ্টার অবরোধে ব্যাপক ভোগান্তি হয়। শুক্রবার হলদিয়া পুরসভার ১৮নম্বর ওয়ার্ডে দু’মিনিটের ঝড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। রাস্তার উপর গাছ উপড়ে পড়ে। একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। এদিন সকাল থেকেই টানা বর্ষণে মানুষজন ঘরবিন্দ হয়ে পড়েন। রাস্তায় যানবাহন ছিল হাতে গোনা। ১৬সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমুদ্র উপকূল এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত দীঘায় সমুদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির ‘লাল’ সতর্কতা থাকায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন উদ্বিগ্ন। 

    এদিন বিকেল ৩টেয় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। প্রত্যেক মহকুমা শাসক, বিডিও এবং সবকটি দপ্তরের জেলার অফিসার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে মিটিং হয়। প্রতিটি বিডিও অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। ডিএম অফিসেও ২৪ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জেলায় কন্ট্রোল রুম নম্বর ৯০৭৩৯৩৯৮০৪। উপকূল এলাকার প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। ময়না, পাঁশকুড়া, নন্দকুমার, হলদিয়ার সহ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্ন হওয়ায় পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। নন্দকুমারে সুলোচনা এলাকায় বিদ্যুৎ সমস্যা প্রশাসনের নজরে আনতে অবরোধ শুরু করেন এলাকাবাসী। পুলিস গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। বিকেলের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। অতিবর্ষণে ৩৩কেভিএ লাইন বিপর্যস্ত হওয়ায় গোটা নন্দীগ্রাম বিদ্যুৎহীন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থে঩কে শনিবার সারাদিন নন্দীগ্রামে বিদ্যুৎ নেই। এরফলে পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা হয়। ব্লক প্রশাসন পিএইচইর গাড়ি পাঠিয়ে পানীয় জল সরবরাহ করেছে। ত্রিপলের চাহিদা রয়েছে। সেজন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩০টি করে ত্রিপল পাঠিয়েছে নন্দীগ্রাম-১ ব্লক প্রশাসন। বিডিও সৌমেন বণিক বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। মূল সমস্যা পানীয় জল নিয়ে। আমরা পিএইচইর গাড়ি পাঠিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।

    পুজোর মুখে টানা বর্ষণে মণ্ডপ তৈরির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তাম্রলিপ্ত পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন সংস্থার সম্পাদক বিষ্ণুপদ পণ্ডা বলেন, মণ্ডপসজ্জা থেকে চাঁদা সংগ্রহ সব কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সকল পুজো উদ্যোক্তা আবহাওয়ার দিকে উপর নজর রাখছেন। সকলের প্রার্থনা, দ্রুত আবহাওয়ার উন্নতি হোক। 

    বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পূর্ব মেদিনীপুরের রিজিওনাল ম্যানেজার রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ভারী বৃষ্টিতে কিছু জায়গায় পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। হলদিয়ায় ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় ২০টি খুঁটি ভেঙে পড়ে। নন্দকুমারে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্ন হওয়ায় অবরোধ হয়েছিল। সেখানে পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক হয়েছে। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, আমরা সবরকমভাবে প্রস্তুত রয়েছি। ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বিডিওদের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)