• বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গ, মৃত ৬
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দিনভর ভারী বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের জনজীবন বিপর্যস্ত হল। দুর্যোগে ছ’জন মারা গিয়েছেন। আসানসোলে বাড়ি ধসে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বীরভূমের সিউড়ির হাটজনবাজারে গাছ ভেঙে একজন মারা গিয়েছেন। মেমারি থানার সাতগাছিয়ায় বজ্রাঘাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মাটির দেওয়াল ভেঙে ও গাছ পড়ে কালনা সহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। নদীগুলিতে জল বেড়েছে। আরামবাগ, বীরভূম ও দুই বর্ধমানে পুজোর বাজার ধাক্কা খেয়েছে। জামাকাপড়ের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের দেখা যায়নি। বিকেলের পর বৃষ্টি থামলেও দোকান বা শপিং মলে পুজোর বাজারের চেনা ছন্দ ফিরে আসেনি। 

    টানা বৃষ্টিতে মৃৎশিল্পীরাও সমস্যায় পড়েন। বিশ্বকর্মা মূর্তি তৈরির কাজও ব্যাহত হয়। তবে বৃষ্টিতে ধান চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। জমিতে জলের প্রয়োজন ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। যদিও জমিতে জল জমে যাওয়ার কারণে সব্জি চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাঁরা বলেন, দ্রুত জল না নামলে গাছ পচে যাবে। পুজোর আগে সব্জির দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে। বর্ধমান শহরের বহু বেহাল রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। রাস্তার গর্তে পড়ে অনেকে জখম হন। রাস্তায় গর্তে জল জমে থাকায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, ভারী বৃষ্টি হওয়ায় জল নামতে সময় লেগেছে।

    রানিগঞ্জ থানার সাহেবগঞ্জে ইসিএলের মাইনিং কলেজের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের একাংশ ভেঙে পড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের নাম রাজীব দাস(১৯) ও চিচোরে বাউরি(২৮)। বারাবনি থানার লালগঞ্জে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম সুবোধ গরাই(২০)। এদিন সকালে সিউড়ির হাটজনবাজারে গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয় কড়িধ্যার বাসিন্দা ননীগোপাল ব্যাপারীর(৫৩)। তিনি দোকানের জিনিসপত্র নিয়ে পুরন্দরপুরের দিকে অটোতে করে যাচ্ছিলেন। সেসময় হাটজনবাজারের মাদ্রাসাপল্লির রাস্তার ধারের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ অটোর উপর ভেঙে পড়ে। সিউড়ি-১ ব্লকের ভুরকুনার কামারডাঙ্গালে বক্রেশ্বর নদীর ব্রিজ জলের তোড়ে ভেঙে যায়। নিম্নচাপের জেরে শনিবার বাঁকুড়া পুরুলিয়া ও আরামবাগে ভারী বৃষ্টি হয়। নদী ও খালগুলিতে বাড়তে শুরু করেছে জলস্তর। বৃষ্টির জেরে আরামবাগ মহকুমায় কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর পর্যন্ত ডিভিসির ব্যারেজ থেকে ৪০হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। তবে বৃষ্টি বাড়তে থাকলে ফের মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

    নদীয়া জেলায় ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে নাকাশিপাড়া ব্লকে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ১০০মিলিমিটার। যার জেরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে জল জমতে দেখা গিয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে কৃষ্ণনগর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল জমে যায়। কৃষ্ণনগর শহরের রাজারদিঘির পাশের রাস্তায় ধস নামতেও দেখা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদে তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরের পর বৃষ্টি একটু কমতেই অনেকে বাজারে কেনাকাটার জন্য আসেন। তবে অন্যান্য‌ ঩দিনের চেয়ে যা অনেকটাই কম বলে বিক্রেতারা জানান। 
  • Link to this news (বর্তমান)