• বাড়িতে চানুর ফটো, দিনহাটার মুলটি দেবনাথের একমাত্র লক্ষ্য ওলিম্পিক্স
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • মুনসুর হাবিবুল্লাহ, দিনহাটা: স্থূলতা কমাতে জিম করার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। ছোট্ট মুলটি দেবনাথ তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মায়ের হাত ধরে ভর্তি হয় দিনহাটার একটি জিমে। বাড়িতে ছোট থেকেই ভারী জিনিস তোলার নেশা ছিল তার। জিম করতে গিয়ে পাওয়ার লিফটিংয়ে আগ্রহ জন্মায়। একরত্তি মেয়ের পাওয়ার লিফটিংয়ে আগ্রহ দেখে ওর বাবা-মা’ও অনুপ্রাণিত করেন। তবে ২০২০ সালে মুলটির স্বপ্ন পাল্টে যায়। টিভির সামনে মুলটিকে নিয়ে বসেছিলেন বাবা মনোজ দেবনাথ। জাপানের টোকিওতে তখন ওলিম্পিকসের আসর বসেছে। টিভির পর্দায় মণিপুরের মেয়ে মীরাবাঈ চানুর লড়াই দেখে বাবা-মেয়ে। অল্পের জন্য সোনা হাতাছাড়া হয় মীরার। তাঁর সেই লড়াই দেখে ভারত্তোলনে আগ্রহী হয় মুলটি। পাওয়ার লিফটিংয়ের বদলে ওয়েট লিফটিংয়ে মনোযোগ দেয় সে। বাড়ির দেওয়ালে মীরার ছবি সাঁটায়। স্বপ্নের খেলোয়াড়ের ছবির সামনে শপথ নেয় ওলিম্পিক্সে অংশ নেওয়ার। ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চায় মুলটি। ১২ বছরের মেয়ের লড়াই এখান থেকেই শুরু। এবারে রাজ্যস্তরে স্কুল গেমসে দ্বিতীয় হয়েছে সে। অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিভাগে অংশ নিয়েছিল। নিজের স্কুল গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিল। রাজ্যস্তরে রূপো জয় করে বাড়ি ফেরার পরে সংবর্ধনা দিয়েছে ওর স্কুল। মুলটিকে সামনে রেখে স্কুলের তরফে মিছিলও করা হয় দিনহাটা শহরে। সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মুলটির স্বপ্নপূরণে সবসময় পাশে রয়েছে স্কুল, এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রীকে। 

    মুলটি বলে, মীরাবাঈ চানু আমার আদর্শ। ওঁর মতো আমিও ওলিম্পিক্সে অংশ নিয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই। ছাত্রীর মা মালা দেবনাথ বলেন, স্থূলতা কমাতেই চিকিৎসকের পরামর্শে জিমে ভর্তি করেছিলাম মেয়েকে। পরবর্তীতে ওর পাওয়ার লিফটিং ও ওয়েট লিফটিংয়ে উৎসাহ দেখে আমরা ওকে অনুপ্রাণিত করি। মেয়ে আরও এগিয়ে যাবে, এটা আমাদেরও স্বপ্ন। 

    গোপালনগর এমএসএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আক্কাস আলি বলেন, পড়াশোনায় বরাবরই নাম রয়েছে আমাদের স্কুলের। খেলাধুলোয় রাজ্যে দ্বিতীয় হয়ে স্কুলের নাম আরও উজ্জ্বল করেছে মুলটি। আমরা চাই মেয়েটি ওর লক্ষ্যে এগিয়ে যাক।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)