• ‘অডিও ক্লিপ’কাণ্ডে এবার গ্রেপ্তার যুব সিপিএম নেতা
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান মঞ্চে হামলার ছক! পুলিসের হাতে আসা একটি ফোনালাপের অডিও ক্লিপে (সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’) ফাঁস হয়ে যায় সেই ষড়যন্ত্র। অভিযোগ, হামলার ছক কষেছিলেন দুই ব্যক্তি, ‘স’ ও ‘ক’। তাদের মধ্যে ‘স’ অর্থাৎ সঞ্জীব দাসকে শুক্রবার রাতেই গ্রেপ্তার করেছিল পুলিস। শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হল দ্বিতীয়জনকে। তিনি ‘ক’ অর্থাৎ, কলতান দাশগুপ্ত। সিপিএমের যুব নেতা। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য মুখপত্রের সম্পাদক। গতকাল সারা রাত দলের লালবাজার অভিযানে শামিল ছিলেন। এদিন ভোরে বাড়ি ফেরার সময় দক্ষিণ কলকাতা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিস। ধৃত দু’জনকে বিধাননগর আদালতে তোলা হয়। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

    তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও সাংবাদিক বৈঠক করে অডিও ক্লিপটি প্রকাশ্যে এনেছিলেন। যদিও তার আগেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে বিধাননগর কমিশনারেট। বিধাননগরের ডিসি অনীশ সরকার এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস করে দেখা গিয়েছে, ভাইরাল অডিও ক্লিপ একেবারে সত্য। হালতু থেকে গ্রেপ্তার হওয়া সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই কলতান দাশগুপ্তর নাম জানা যায়। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিস তাঁকে গ্রেপ্তার করে।’ পুলিস আরও জানিয়েছে, অডিও ক্লিপে বাপ্পা, দাদু ও সাহেব নামে আরও তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।

    যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলতান। এদিন ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় ঢোকার মুখে তিনি বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করার মুহূর্তে কিছুই বলা হয়নি।’ পার্টির ‘গুড বয়’ কলতানের পাশেই অবশ্য দাঁড়িয়েছে সিপিএম। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর যুক্তি, ‘এআই বা কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে এই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও যুব নেতার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আর জি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে চলা গণআন্দোলনকে বদনাম করতেই যে এই  অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।’ এই ঘটনার সঙ্গে ভীমা কোরেগাঁও বা দিল্লি দাঙ্গা মামলায় বিজেপি ও আরএসএসের কৌশলের তুলনা টেনেছেন তিনি। সেলিম আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষনেত্রী গণআন্দোলনের বিরুদ্ধে এআই-এর অপব্যবহারের কথা বলছেন। অথচ তাঁর দলের আইটি সেল ডিপফেক এবং সাজানো ক্লিপ ব্যবহারে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে!’

    পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। দলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার জন্য শেষমেষ জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার প্ল্যানিং? ভাবতেও অবাক লাগে, সেই প্ল্যানিংয়ের অন্যতম অংশ সিপিএমের যুব নেতা। এখন প্রশ্ন, এই কথোপকথনের ‘সাহেব’ কে? ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী? নাকি মহম্মদ সেলিম? আমি নিশ্চিত, ১৪ তারিখ রাতের হামলার ঘটনাতেও এরা যুক্ত।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)