• মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে ডাক্তারদের মঞ্চ খুঁজে পৌঁছল খুদে শাহিদ
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পরনে মলিন গেঞ্জি আর হাফ প্যান্ট। পায়ে চটি নেই। চোখের দৃষ্টি নরম। অনেকটা পথের পাঁচালির অপুর মতো। ইসলামিয়া স্কুলে পড়াশোনা করে। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। নাম শাহিদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর খুব ভালো লাগে। বাসে উঠে মাঝে-মধ্যে গান গায় শাহিদ। টুকটাক টাকাপয়সা রোজগার হয়। তা সংসারের কাজে আসে। তখন তার কাঁধে একটা ছোট বাক্স ঝোলানো থাকে। শনিবার সকালে মৌলালি থেকে বাসে উঠে গান গাইতে গাইতে গিয়েছিল সল্টলেক। আচমকা কানে এল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন। শাহিদকে তখন ওখান থেকে অন্য কোথাও পাঠায় কে? খুঁজতে খুঁজতে সোজা এল চিকিৎসকদের অবস্থান মঞ্চে। মমতা এলেন। শাহিদ দেখল। তারপর দেখল, খাওয়া-দাওয়ার এলাহি আয়োজন। কিন্তু এসব খাবার তার খুব একটা পছন্দ নয়। ফলে চাইল না। কিন্তু খিদে পেয়েছিল। টেবিলে বেশ কিছু ফলের রসের প্যাকেট রাখা ছিল। তার সামনে দাঁড়িয়ে রইল ঠায়।

    ‘কেন ভালো লাগে মমতাকে?’ প্রশ্নের উত্তরে অবস্থান মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে শাহিদ বলে, ‘আমি ধর্মতলায় দেখি উনি অনেক কিছু বলেন। খুব ভালো লাগে।’ ‘এখানে কী হচ্ছে জান?’ উত্তরে ঘাড় নাড়ল। সে কিছুই জানে না। কোথায় কী হয়েছে, কেন এখানে স্লোগান হচ্ছে, কিছুই জানে না। শাহিদ শুধু জানে, মমতা এসেছিলেন। ওর জিজ্ঞাসা, ‘মমতার সভা হচ্ছে না?’ বলে ফলের রসের দিকে তাকিয়ে রইল। একজন দয়াপরবশ হয়ে তার হাতে দিল বেশ কয়েকটি ফলের রসের প্যাকেট। ও জানাল, ‘এগুলো মাকে দেব। মায়ের শরীর ভালো নেই। আজ কাজে বের হতে পারেনি।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক ঝলক দেখা হয়েছে। মায়ের জন্য ফলের রসও পাওয়া হয়ে গিয়েছে। নিজেও খেয়েছে। খিদে মেটেছে। কাজেই ওর আর দাঁড়িয়ে কাজ নেই। শাহিদ চলল বাস ধরতে। বাসে গান গাইলে কিছু রোজগার হবে। তা সংসারের কাজে আসবে। যাওয়ার আগে শুধু প্রশ্ন করে গেল একটা। ‘এটা কী হচ্ছে? কি হচ্ছে এখানে?’ তার প্রশ্নের উত্তর কেউ দিলেন না। মমতার বক্তব্য শুনতে না পেয়ে খানিক মনমরা হয়েই রওনা দিল বাস ধরতে। 
  • Link to this news (বর্তমান)