• ‘রাজনৈতিক কারণ’ দেখিয়ে ফিরহাদের মস্কো যাত্রা বাতিল করল মোদি সরকার
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিদেশ যাত্রার অনুমতি বাতিল করল কেন্দ্র। আসন্ন ব্রিকস (বিআরআইসিএস) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য মস্কোর মেয়রের তরফে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আগামী ১৭ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর রাশিয়া সফরের কথা কথা ছিল। দেশের মধ্যে একমাত্র কলকাতার মেয়রই আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। এই সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়া যাচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। সম্মেলনের ফাঁকে আয়োজক দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ব্রিকসের সদস্য দেশ হিসেবে সম্মেলনে হাজির থাকবেন ব্রাজিল, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানরা। এহেন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েও বিদেশ মন্ত্রকের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে কলকাতার মেয়রের মস্কো যাত্রা বাতিল হল। সূত্রের দাবি, ‘রাজনৈতিক কারণ’ দেখিয়ে শনিবার দুপুরে দিল্লি থেকে এই ‘যাত্রাভঙ্গের’ বার্তা আসে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পিছনেও বিজেপি-তৃণমূলের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বই দেখছেন নবান্নের অভিজ্ঞ আমলারা।

    উল্লেখ্য, এই পর্যায়ের আমন্ত্রণ এলে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র একান্ত জরুরি। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের (সিএমও) সবুজ সঙ্কেত আবশ্যক। নবান্নের তরফে ফিরহাদ সেই অনুমতি পেয়েছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ফরেন ব্রাঞ্চের (এফসিআরএ) অনুমতি দরকার হয়। অমিত শাহের মন্ত্রক সেই অনুমতিও দিয়েছিল। পরিশেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মুখ্যসচিবের তরফে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। এস জয়শঙ্করের মন্ত্রক তা দিতে অস্বীকার করে। নবান্নের এক আমলা জানান, সরকারি কাজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একাধিকবার বাংলায় এসেছেন মোদি। প্রোটোকল হিসেবে তাঁকে স্বাগত বা বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা গিয়েছে ফিরহাদকে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং তাঁকে ‘হাকিম সাহেব’ বলে সম্বোধন করেছেন। সেই সঙ্গে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম প্রধান বিজেপি-বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ফিরহাদের। সেই সমীকরণেই কলকাতার মেয়রকে মস্কো যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল না বলে দাবি ওই আমলার। তিনি আরও দাবি করেন, মূল সম্মেলনে বা তার বাইরে কোনও ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতে পারেন বাংলার এই প্রতিনিধি। সেই আশঙ্কা থেকেই পুরমন্ত্রীর বিদেশযাত্রা বাতিল করল দিল্লি। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী কন্ঠস্বর চেপে দিতে তৎপর। দিল্লি, ঝাড়খণ্ড সহ একাধিক বিরোধী শাসিত রাজ্যে এমন উদাহরণ দেখা গিয়েছে। ফলে ‘জোড়াফুল’ বনাম ‘পদ্মফুল’ সংঘাতই ফিরহাদের বিদেশযাত্রার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একটা বড় অংশ।           
  • Link to this news (বর্তমান)