• 'লাইনে এরপর… তাই চন্দ্রিমাকে CM বলেন', কালীঘাটের বৈঠক নিয়ে উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • গতকাল বেশ কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টিতে ভিজেও কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয়নি জুনিয়র ডাক্তারদের। মাঝে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাইরে এসে তাঁদেরকে ভিতরে যেতে বলেছিলেন। বৃষ্টিতে ভিজতে বারণ করেছিলেন। চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে লাইভ স্ট্রিমিং বা ডাক্তারদের তরফ থেকে ভিডিয়ো রেকর্ড করতে দেননি। এই আবহে চিকিৎসকরাও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র বৈঠকের 'মিনিটস' নিয়েই কথা বলতে রাজি হন তাঁরা। তবে ততক্ষণে উলটোদিক থেকে বৈঠক করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এই আবহে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির খবরেই বৈঠক বাতিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, শুভেন্দু দাবি করেন, এরপরে গ্রেফতার হতে পারেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল খোদ।

    সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং চিকিৎসকদের কথাবার্তার ভিডিয়ো প্রকাশ করে শুভেন্দু লেখেন, 'মুখ্যমন্ত্রী এবং জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে বৈঠক বাতিলের সঠিক কারণ - টালা থানার ওসি এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি আশঙ্কা করেছেন যে এরপর সারিতে থাকা পরবর্তী ব্যক্তিটি হতে পারেন বিনীত গোয়াল। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মনোজ পন্তকে বৈঠক বাতিল করতে বলেছিলেন তিনি।' 

    এদিকে যে ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, আন্দোলনকারীরা বৈঠকের আর্জি জানাচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে তখন বলতে শোনা যায়, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আজ আর বৈঠক সম্ভব না। প্রসঙ্গত, বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরও চিকিৎসকরা আর্জি জানিয়েছিলেন, যাতে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্যে হলেও বৈঠক হয়। আসলে কালও শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল লাইভ নিয়ে জটিলতা। প্রথমে চিকিৎসকা লাইভ স্ট্রিমিংয়েরই দাবি জানান। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি হওয়ায় সেই দাবি মানা সম্ভব নয় বলে জানায় প্রশাসন। তবে ভিডিয়ো রেকর্ডিং হবে বলে জানানো হয়। তখন চিকিৎসকরা দাবি করেন, তাঁরাও যেন রেকর্ডিং করতে পারেন। তবে তাতেও সায় ছিল না প্রশাসনের। এমনকী সরকারের ভিডিয়ো করার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের থাকাতেও আপত্তি ছিল। এবং গতকাল বৈঠক শেষের পরই সেই ভিডিয়ো ডাক্তারদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন মমতা। তবে মুখ্যমন্ত্রী তখন দাবি করেছিলেন, বৈঠকের মিনিটস রাখা হবে। বৈঠক শেষে দুই পক্ষই তাতে সই করে দেবে। দীর্ঘ টালবাহানা এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনার পরে তাতেই রাজি হয়ে যান ডাক্তাররা। তবে সেই কথা জানাতে গেলে ডাক্তারদের ফিরে যেতে বলা হয়।

    আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার বলছে তাঁরা দুঘণ্টা অপেক্ষা করেছে, তাই 'ম্যাডাম' এখন আর বৈঠক করতে পারবেন না। কিন্তু আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ৩৫ দিন ধরে অপেক্ষা করছেন। বৃষ্টিতে ভিজে তাঁরা কালীঘাটের সামনেও অপেক্ষা করেছে কয়েক ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছে চিকিৎসকরা আর্তি রাখেন, অন্তত ৩০ মিনিট বৈঠক করার জন্যে। তবে তাতেও রাজি হয়নি প্রশাসন। পরে অবশ্য চিকিৎসকরা ধরনামঞ্চে ফিরে এসে সরকারকে পালটা তোপ দেগে প্রশ্ন তোলে, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারির খবর কানে পৌঁছাতেই কি বৈঠক করা হল না?
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)