বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের জুড়ে দু’ দিন ধরে একটানা বৃষ্টি চলছে। তাতে সমস্যায় পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। দু’ দিন পরে বিশ্বকর্মা পুজো। দুর্গাপুজোর আর এক মাসও দেরি নেই। এই অবস্থায় প্রতিমা শুকোনো নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। নাছোড় বৃষ্টি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তাঁদের।
প্রতিমা শুকোনো থেকে শুরু করে প্রাথমিক রং করা, সবই ঝুলে রয়েছে বলে দাবি শিল্পীদের। তবে যেহেতু দু’দিন পরেই বিশ্বকর্মা পুজো। তাই কোথাও ত্রিপল খাটিয়ে কোথাও আবার বাড়ির মধ্যেই প্রতিমা রেখে শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। জায়গার অভাবে অনেক মৃৎশিল্পী তাঁদের অর্ধসমাপ্ত মূর্তি পাঠাচ্ছেন মণ্ডপে। সেখানে গিয়ে তাঁরা বাকি কাজ শেষ করবেন বলে মনস্থ করেছেন।
খামখেয়ালি বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়েছেন প্রতিমা শিল্পী সুভাষ দাস। তিনি বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টির ফলে আমাদের কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। হাতে সময় কম। এখন আমার কাছে ১২টি ঠাকুর তৈরির বায়না রয়েছে। কিন্তু এমন বৃষ্টি আর ক’ দিন চললে সময়ে কাজ শেষ করতে পারব কি না জানি না। সামান্য কিছু সময় রোদ উঠছে। তখন প্রতিমা শুকোতে দিচ্ছি। ফের বৃষ্টি হলে ঠাকুর ঢাকতে হচ্ছেত্রিপল দিয়ে।’’
বহরমপুরের গান্ধী কলোনির বাসিন্দা শ্রীদাম হালদারের মৃৎশিল্পী হিসেবে নাম আছে। জেলার বাইরে থেকেও তাঁর কাছে বায়না আসে। এ বার তাঁর কাছে পুজোর বায়না এসেছে ১৫টি। তিনি বলেন, ‘‘বৃষ্টির জেরে প্রতিমা কারখানায় রাখা যাচ্ছে না। অনেক প্রতিমা মণ্ডপে পাঠিয়ে দিয়েছি। বৃষ্টি লেগে থাকলে লাভের পরিমাণ কমবে। কারণ, কৃত্রিম উপায়ে প্রতিমা শুকোনোর খরচ বেশি হয়।’’
বহরমপুর শহরের এক শিল্পী ইতিমধ্যে কারখানা থেকে অর্ধসমাপ্ত প্রতিমা পলিথিনে ঢেকে একটি মণ্ডপে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কারখানায় জায়গা কম। তাই প্রতিমা রাখার সমস্যা হচ্ছে। বাকি কাজ তিনি মণ্ডপেই শেষ করবেন বলে জানান। ওই পুজোর সদস্য স্বর্ণকমল ভাদুড়ি বলেন, ‘‘আমাদের পুজোর এ বার ৭০তম বর্ষ। বৃষ্টিতে প্রতিমা তৈরি করতে শিল্পীর সমস্যা হচ্ছিল। তাই তিনি প্রতিমা মণ্ডপে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’’ এদিকে, বৃষ্টির জেরে বিশ্বকর্মা পুজোর বাজারও জমেে উঠতে পারেনি। আজ, ররিবার ছুটির দিন। বৃষ্টি কমে আহাওয়ার উন্নতি হলে আজ ও কাল বাজারে ক্রেতার ঢল নামবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার সারা দিন ধরেই কখনও ঝিরঝিরেকখনও মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে মণ্ডপের কাজও তেমন এগোয়নি।