এই সময়: ফুটপাথের পাশে পড়ে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ নাড়াচাড়া করতে গিয়ে হঠাৎ বিস্ফোরণ। ঘটনার জেরে হাতের একাংশ উড়ে গেল এক ভবঘুরের। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে, এসএন ব্যানার্জি রোডের লোটাস মোড়ের পেট্রোল পাম্পের পাশে। জখম ব্যক্তির নাম বাপি দাস। ৫৮ বছর বয়সি ইছাপুরের ওই বাসিন্দা তালতলা এলাকার ফুটপাথে থাকতেন। কাগজ কুড়োনোর কাজ করতেন বহুদিন ধরে।কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। কীভাবে এবং কী থেকে বিস্ফোরণ হয়েছিল, পরীক্ষার পরেই তা জানা যাবে।’ জখম ব্যক্তি বর্তমানে এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ ওই এলাকায় হঠাৎই একটি বিস্ফোরণ হয়। বিকট শব্দে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘটনার জেরে বাপির ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। খবর পেয়েই তালতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সেখানে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের খানিকটা অংশ তখনও পড়ে ছিল। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় গুরুতর জখম অবস্থায় বাপিকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। জখম ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লালবাজারের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড। ঘটনাস্থলের চারপাশে সিকিউরিটি টেপ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। নিরাপত্তার কারণে এসএন ব্যানার্জি রোডের উপর কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় আশপাশের সব দোকান। এরপর বোমা বিশেষজ্ঞরা ওই প্লাস্টিকের ব্যাগটি পরীক্ষা করেন। বিপদের আভাস না থাকায় মিনিট পনেরো পরে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে কয়েক হাত দূরেই ফাস্ট ফুডের দোকান বাসন্তী সরকারের। তিনি বলেন,‘আচমকা আমরা বিকট আওয়াজ শুনে মনে হয়েছিল হয়তো টায়ার ফেটেছে। কিছুক্ষণ পর গিয়ে দেখি, উল্টোদিকের ফুটপাথে থাকা এক ব্যক্তির হাতের একাংশ উড়ে গিয়েছে।’
আরজি করের ঘটনায় মাস খানেক ধরেই উত্তাল শহর। রোজই প্রায় প্রতিবাদ মিছিল আয়োজিত হচ্ছে শহরে। যার মধ্যে একাধিক মিছিল যাচ্ছে এসএন ব্যানার্জি রোড ধরেও। তাছাড়া, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বহু মানুষের ভিড় থাকে এই তল্লাটে। এমন জনবহুল এলাকায় কে বা কারা ওই প্লাস্টিকের ব্যাগ ফেলে গেল তা নিয়ে রহস্য দানা বেধেছে। ঘটনাকে ঘিরে আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারাও।
এই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘পুলিশকে বলেছি দ্রুততার সঙ্গে কী কারণে এই ঘটনা এবং নেপথ্যে কারা, তা সামনে আনতে।’