ঝাড়খণ্ডের দিকে ধীরে ধীরে সরতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গে অবস্থানরত অতি গভীর নিম্নচাপ। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোমবারও দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতার কাছাকাছি থাকা নিম্নচাপের প্রভাবে শহর জুড়ে সারাদিন মেঘলা আকাশ ও মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি দেখা যাবে।
বৃষ্টি ও জল ছাড়ার পরিমাণ
শনিবার দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। দিঘায় সর্বাধিক ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। বাঁকুড়ায় ১০৮ মিমি, পানাগড়ে ৯৫ মিমি, মেদিনীপুরে ৮৪ মিমি এবং শ্রীনিকেতনে ৮২ মিমি বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। কলকাতায় সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.২ ডিগ্রি এবং গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৫ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ।
এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) ২৬ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়ছে, যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়লে, দক্ষিণবঙ্গের নদী সংলগ্ন এলাকাগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাবে এবং বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
নিম্নচাপের গতিবিধি
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডের দিকে ধীরে ধীরে সরে গেলেও, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে এর প্রভাব এখনও থাকবে। এছাড়াও, মৌসুমী অক্ষরেখার সক্রিয়তার ফলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ ও উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিকেল পর্যন্ত এই নিম্নচাপ শক্তিশালী থাকবে, তারপর শক্তিক্ষয় হয়ে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরতে শুরু করবে।
মৎসজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা
নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর বিশেষভাবে উত্তাল রয়েছে। ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মৎসজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর রবিবার পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি এলাকায় সমুদ্রপথে যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
অতি গভীর নিম্নচাপ ঝাড়খণ্ডের দিকে সরলেও, বাংলার আবহাওয়া এখনও বিপজ্জনক। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার কারণে আগামী কয়েকদিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় পরিস্থিতি জটিল থাকতে পারে। মৎসজীবীদের সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এবং সাধারণ মানুষকেও অযথা বাইরে না বেরিয়ে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।