মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং নিয়ে অনড় ছিলেন ডাক্তাররা। গতকাল বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর ডাক্তারদের দাবি ছিল তারা লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিয়োগ্রাফির দাবি থেকে সরে এসেছিলেন। কিন্তু সরকার তার পরেও বৈঠকে রাজি হননি। এনিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, চল্লিশ জন ডাক্তারদের তরফে বৈঠকে এসেছিলেন। তার অর্থ তাদের আন্দোলনকারীরা বিশ্বাস করে। তাহলে লাইভ স্ট্রিমিং কেন? বলাই হয়েছে বিষয়টি বিচারাধীন বিষয় লাইভ করা যাবে না। বরং বৈঠকের মিনিটস হবে। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সই করবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরে ওরা বলেছেন মিনিটস চান। তাহলে এই কথাটা আগেই বলতে পারতেন। তার জন্য ৩ ঘণ্টা সময় নষ্ট করার কোনও দরকার ছিল না। জুনিয়র ডাক্তাররা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন তারা জন সাধারণের জন্য কাজ করেন। তাদের প্রয়োজন আছে। আশাকরি তাঁরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসবেন।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বুঝতে হবে এই কর্মবিরতি মানুষের জন্য কতটা ক্ষতিকারক হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ২৯ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছে। অন্তত ৭ হাজার মানুষ অপারেশনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাছাড়াও বহু সন্তান সম্ভবা মহিলা আটকে রয়েছেন। এসব তো ভাবতে হবে। শুধু মাত্র তিন ঘণ্টা দেখলে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী দুদিন অপেক্ষা করেছেন। ডাক্তাররা যখন বলবেন তখনই আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এমনটা তো হতে পারে না।
এদিকে, গতকাল বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর কী বলেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা? কালীঘাটেই তাঁরা বলেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিয়োগ্রাফির দাবি থেকে সরে এসেছিলেন। কিন্তু সরকার শেষপর্যন্ত বৈঠকে রাজি হয়নি। এতে তারা হতাশ।
আন্দোলকারীদের তরফে বলা হয়, আমরা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা বলেন তা সম্ভব নয়। আমাদের তরফ থেকে বলা হয় তাহলে দুপক্ষকে ভিডিয়োগ্রাফি করতে দেওয়া হোক। তাতেও ওঁরা রাজি নন। সুপ্রিম কোর্ট বললে তা দেওয়া হবে। ওই ভিডিয়োটা আমাদের কাছে থাকবে প্রমাণ হিসেবে।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে আলোচনায় বসার অনুরোধ করেন। এনিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা ভাবলাম ঠিক আছে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের প্রতি সম্মান রেখে কোনও ভিডিয়োগ্রাফি ছাড়াই বৈঠকে বসব। বৈঠকের মিনিটস দিলেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ওই কথা শুনে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি। তারপর যখন বলতে গেলাম তখন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, আর হবে না। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আমরা ২-৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। আর আলোচনা সম্ভব নয়। আমরা তো এতটা নামলাম। যাতে অচলাবস্থা কাটতে পারে তার জন্য তার জন্য সবকিছু ছাড়লাম। তার পরে আমাদের কী বলা হল? আমাদের বলা হল আপনারা বেরিয়ে যান, নয়তো আপনাদের বাস ডেকে বের করে দেওয়া হবে। এরপর স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বেরিয়ে গেলেন। আমরা ৩৫ দিন অপেক্ষা করছি। আমরা আলোচনা করতে এসেছিলাম।কিন্তু আমাদের একপ্রকার ঘাড়ধাক্কা দেওয়া হল। আমরা হতাশ। তবে আশাবাদী।