কাল, সোমবারই ধর্মতলায় শেষ হচ্ছে বিজেপির ধর্না-অবস্থান। তার পর কোন পথে হাঁটবে বিজেপির আন্দোলন? অনেক চেষ্টাতেও আরজি কর আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত সে ভাবে রেখাপাত করতে পারেনি গেরুয়া ব্রিগেড। বরং এই আন্দোলনের সঙ্গে বামপন্থীরা যে অনেক বেশি সম্পৃক্ত, তা ঠারেঠোরে একাধিক বার স্বীকার করেছেন বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা।তাই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ চূড়ান্ত করতে চাইছেন তাঁরা। তাঁরা চাইছেন, আরজি কর আন্দোলনের জের আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত জিইয়ে রাখতে। সেই লক্ষ্যে নাগরিক আন্দোলনের সমান্তরালে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইছে বিজেপি। সেটা যে ধর্মতলায় ধর্নায় বসে থাকলে হবে না, তা নিয়ে বঙ্গ-বিজেপিতে দ্বিমত নেই।
সূত্রের খবর, পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে দ্রুত বৈঠকে বসতে চলেছেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য এই আন্দোলন যাতে কোনও ভাবে বামেদের হাতে না যায়, তা সুনিশ্চিত করা।’ আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। সিপিএম এবং বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলি চিকিৎসক এবং নাগরিক সমাজের আন্দোলনের সমান্তরালে রাস্তায় থেকে নিজেদের বিরোধী অবস্থান শক্তোপোক্ত করতে চাইছে।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, সিপিএম দলীয় ঝান্ডা ছেড়ে নাগরিক আন্দোলনগুলির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। নাগরিক আন্দোলন থেকে ওঠা স্লোগানগুলিতে ‘বাম-গন্ধ’ ভরপুর বলেও বিজেপির অভিযোগ। এমনকী, সল্টলেকে স্বাস্থ্যভবন লাগোয়া বিজেপির রাজ্য দপ্তরের বাইরেও বাম কর্মীরা নিজেদের দলের স্লোগান লিখে দিয়েছেন বলে শনিবার অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য।
এই অবস্থায় ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধে বসে থাকলে যে চলবে না, সেটা বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন সুকান্ত মজুমদাররা। কারণ, এমনিতেই সেখানে বিশেষ ভিড় হচ্ছে না, তা ছাড়া রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, ধর্মতলায় বিজেপি নেতাদের চুপ করে বসে থাকার সুযোগ নিয়ে বাম দলগুলি জেলায় জেলায় আরজি কর ইস্যুতে নিজেদের সংগঠন মজবুত করে নিচ্ছে।
বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের কথায়, ‘১৬ তারিখ ধর্মতলায় আমাদের ধর্না কর্মসূচি শেষ হচ্ছে। ওই দিনই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মঞ্চ থেকে আরজি কর ইস্যুতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। আমাদের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলা লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই আমরা কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের অফিস ঘেরাও করেছি। কিছু দিনের মধ্যেই টালা থানাও ঘেরাও করব।’