• বিশ্বভারতীর ছাত্রীর আত্মহত্যা কাণ্ডে কলকাতা থেকে ধৃত দুই
    বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: বিশ্বভারতীর শিল্প সদনের ছাত্রী অনামিকা সিংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা থেকে দুই সাইবার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করল শান্তিনিকেতন থানার পুলিস। ধৃতরা মোটা টাকা চেয়ে অনামিকাকে হুমকি দিচ্ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। 

    শিক্ষক দিবসের দিন বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন অনামিকা সিং। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রীর মা প্রেমলতা দেবী। তদন্ত শুরু করে পুলিস। অবশেষে, ঘটনার ন’দিনের মাথায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হল তারা। ধৃতদের নাম মোহাম্মদ ফায়েজ ও মোহাম্মদ কাইফ। শনিবার তাদের কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দু’জনই সাইবার প্রতারক। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতরণার অভিযোগ রয়েছে। রবিবার দুই অভিযুক্তকে বোলপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক সমরজিৎ রায় তাদের ১১ দিন পুলিস হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

    অনামিকার বাড়ি উত্তপ্রদেশে। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই শান্তিনিকেতনে চলে আসেন মা-বাবা ও দাদা। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে এসে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওইদিনই সাংবাদিকদের প্রেমলতাদেবী জানিয়েছিলেন, কোনও কিছুর চাপে পড়ে মেয়ে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা সত্য জানতে চাই। এরপর অনামিকার দেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে ময়না তদন্ত করা হয়। পাশাপাশি, দুর্গাপুর থেকে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল শান্তিনিকেতনে আসেন। পুলিসের উপস্থিতিতে ওই দল বিশ্বভারতীর আম্রপালি হস্টেলে যান। অনামিকার সিল করা ১২১ নম্বর ঘরটিতে ভিডিওগ্রাফারের উপস্থিতিতে যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেন ফরেনসিক দলটি। মৃতার মোবাইল, টাকা পাঠানোর নথি, কিছু খাতা ইতিমধ্যেই উদ্ধার করেছে পুলিস। তার মোবাইলটির লক খোলার কাজ চালাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। সেটা আনলক হয়ে গেলে তদন্তে আরও গতি আসবে বলে জানিয়েছে পুলিস। 

    তবে, প্রাথমিকভাবে অনামিকার নাম্বারের সিডিআর (কল ডিটেইলস রেকর্ড) বের করে পুলিস। সেখানেই তদন্তকারীরা অভিযুক্ত ফায়েজ ও কাইফের খোঁজ পান। পাশাপাশি অত্যাধুনিক টেকনোলজির ভিত্তিতে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন পুলিস। এরপর শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকায় যান তদন্তকারীরা। সেখানেই ধৃতদের বাড়ি। বাড়ি থেকেই তাদের ধরা হয়। দু’জনের বয়স ২৩ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এত কম বয়সেই সাইবার দুনিয়ার তারা যেভাবে হাত পাকিয়েছে, তাতে অবাক তদন্তকারীরা। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে এই দুজনের সাথে অনামিকার আর্থিক লেনদেনের চ্যাট ও ফোন কল পাওয়া গিয়েছে। তবে এই প্রতারণার ঘটনায় আরও অনেকেই জড়িয়ে রয়েছে বলে পুলিসের অনুমান।  অনামিকাকে কে হুমকি দিয়েছিল, তাকেও হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিস। 

      (অনামিকা সিং। ফাইল চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)