• বড়ন্তিতে সরকারি গেস্ট হাউসটির দৈন্যদশা, মুখ ফিরিয়েছেন পর্যটকরা
    বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: সাঁতুড়ি ব্লকে বড়ন্তিতে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে পর্যটকদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইকো- ট্যুরিজিম (গেস্ট হাউস) তৈরি করা হয়েছে। তবে দীর্ঘ প্রায় আট বছর পেরিয়ে গেলেও ইকো-ট্যুরিজিম এলাকায় সরকারের তরফ থেকে উন্নয়নের তেমন কিছু কাজ করা হয়নি। ফলে ট্যুরিজম এলাকায় থাকা কটেজ, ডিলাক্সের দেওয়ালগুলি থেকে রং খসে পড়েছে। দেওয়াল জুড়ে শ্যাওলা জমা হচ্ছে। কটেজের ভিতরে থাকা প্লাইউডের কাজগুলি নষ্ট হচ্ছে। ফলে পর্যটকরা বিমুখ হয়ে পড়ছেন। সংস্কার না হওয়ায় এলাকায় ঘুরতে আসার পর্যটকরা বেসরকারি গেস্ট হাউসগুলিতেই থাকছেন। পর্যটকরা সরকারি গেস্ট হাউসগুলি সংস্কারের আবেদন জানিয়েছেন।

    সাঁতুড়ি ব্লকের বিডিও পার্থ দাস বলেন, ইকো ট্যুরিজমের কটেজ, ডিলাক্সগুলিকে রং করা হবে। পাশাপাশি কিছু সংস্কারের কাজের প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলিও করা হবে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যটন কেন্দ্রগুলি উন্নয়নের জন্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সাঁতুড়ি ব্লকের বড়ন্তি পর্যটনকেন্দ্রকে নানাভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। আগামী দিনে বেশ কিছু কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে বড়ন্তি পর্যটন কেন্দ্রের বিকাশের জন্য জলাধারের সামনে ইকো-ট্যুরিজম (সরকারি গেস্ট হাউসটি) গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে সেখানে চারটি টেন্ট, চারটি কটেজ, চারটি ডিলাক্স ও দু’টি সুইট রুম রয়েছে। এছাড়া আকর্ষণের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। যেখানে চড়ে পর্যটকরা বড়ন্তির দৃশ্য দেখতে পান। শুধু তাই নয়, সেই সময় বড়ন্তি যাওয়ার জন্য পাকা পিচ রাস্তা, জলাধারের রাস্তার দুই ধারে সোলার আলো, টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে সেই ইকো-ট্যুরিজিয়ামের রুমগুলির রং খসে পড়েছে। বিভিন্ন কারুকার্যের কাজগুলিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সোলার লাইট নেই। পর্যটন কেন্দ্র যাওয়ার রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। টয়লেট নির্মাণ হলেও এখনও চালু করা হয়নি।

    গত শনিবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভিন্ন উৎসবের জন্য টানা চারদিন ছুটি রয়েছে। তাই শরতের সবুজ পাহাড় আর কাশফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসা পর্যটকদের মধ্যে শেফালি খাওয়াস, অনিমা সুপকার, সুজয় ওঝা বলেন, এখানকার পাহাড়গুলি খুব সুন্দর। তবে আসার রাস্তা মোটেই ভালো নয়। সন্ধ্যার সময় জলাধার ঘুরতে গেলে আলোর তেমন ব্যবস্থা নেই। ইকো-ট্যুরিজমের (সরকারি গেস্ট হাউসগুলি) রুমগুলি থাকার মতো ভালো নয়। অথচ সেই পরিমাণ টাকা দিয়ে আমরা বেসরকারি গেস্ট হাউসে সুন্দরভাবে থাকতে পারছি।

    উল্লেখ্য, বড়ন্তি জলাধারকে নির্ভর করে বর্তমানে ৩০টিরও বেশি ছোট, বড় বেসরকারি গেস্ট হাউস গড়ে উঠেছে। বর্তমানে আরও কয়েকটি গেস্ট হাউস নির্মাণের কাজ চলছে। ফলে বোঝাই যায়, বড়ন্তি পর্যটকদের কাছে কতটা আকর্ষণীয়।

    পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ইকো- ট্যুরিজম এলাকাটি পঞ্চায়েত সমিতির তরফ থেকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তাটি পথশ্রী প্রকল্পে কাজ দেওয়া আছে। টয়লেটটি পিকনিক মরশুমে খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া জলাধারের চারপাশে আলো লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)