• ঘোলা জলে মাছ ধরতে বেসরকারি ইতিহাস বইয়ের পুরনো বিতর্ক টেনে আসরে বিজেপি
    বর্তমান | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেসরকারি একটি প্রকাশনা সংস্থার ইতিহাস সহায়িকা বইয়ের কিছু অংশ নিয়ে ফের আসরে নামল বিজেপি। রবিবার বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, বইটিতে দেশভাগ প্রসঙ্গে মদনমোহন মালব্য এবং গোলওয়ালকারের মতো ব্যক্তিত্ব ছাড়াও হিন্দু মহাসভা, আর্য সমাজ প্রভৃতি সংগঠন সম্পর্কে বিকৃত তথ্য দেওয়া রয়েছে। শমীকবাবুর দাবি, বইটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নয়া সিলেবাস অনুযায়ী লেখা। সেই কারণে সরকারকেও এর দায় নিতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যেই সংশোধন করে নতুন বই বাজারে না আনলে মামলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। সেটি বিজেপির হয়ে করবে কোনও একটি সংগঠন। একইসঙ্গে ভাঙচুর চালানোর প্রচ্ছন্ন উসকানিও ছিল তাঁর বক্তব্যে। তাঁর বার্তার সারাংশ ছিল, সারা রাজ্যে প্রতিরোধ হচ্ছে। হিন্দু বাঙালি জেগে উঠেছে। সাবধানে থাকুন সেই প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধাররা। কখন কী হয়ে যায়, তা কিন্তু কেউই বলতে পারে না। 

    স্কুল সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইতিহাস কেন, কোনও বিষয়ের নতুন সিলেবাসই তো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়নি। এই ব্যাপারে কোনও বিতর্ক হলে তার দায় আমরা নেব কেন? গোটা বিতর্ক প্রসঙ্গে হতাশাই প্রকাশ করেন প্রকাশনা সংস্থার অন্যতম কর্ণধার দেবাঞ্জন মণ্ডলও। বলেন, ‘নতুন সিলেবাস এখনও বের হয়নি। বইটিও নতুন নয়। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও বইটির এই অংশ নিয়েই আপত্তি উঠেছিল। আমাদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল একটি সংগঠন। তবে তা নিয়ে কিন্তু বেশি দূর এগতে পারেনি তারা। এই বইতে যে তথ্য রয়েছে, তা যেসমস্ত বই থেকে সংগৃহীত, বিবলিওগ্রাফিতে রয়েছে তারও উল্লেখ। দেশভাগে হিন্দু এবং মুসলমান, দু’পক্ষের ভূমিকাই নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা কোনও সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে নেই।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে বিজেপি। তা না-হলে পুরনো ইস্যুটি তারা আবার নতুন করে নাড়াচড়া করত না। বইটির যুগ্ম অনুলেখক হিসেবে একজন মুসলিম শিক্ষককে ‘বাংলাদেশি’ বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন বিজেপি নেতা। অনেকের মতে, বাংলাদেশের উগ্র ইসলামপন্থীদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এক করে সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ তৈরিরই চেষ্টা করছে বিজেপি।
  • Link to this news (বর্তমান)