রাম মন্দিরের থিমে দুর্গাপুজো, আয়োজক হুগলির জিরাট সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। চলতি বছর ৭৫ বর্ষে পা দিচ্ছে এই পুজো। সাবেকিয়ানা ছেড়ে তাই থিমের দিকেই ঝুঁকেছেন উদ্যোক্তারা। থিম রাম মন্দির হলেও রাজনীতির ধারে পাশেও ঘেঁষতে চাইছেন না আয়োজকরা। তাঁদের কথায়, 'এই উদ্যোগ শুধুমাত্র পুজোর কথা চিন্তা করে। এখানে রাজনীতির লেশমাত্র নেই।’দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। চারিদিকে সাজোসাজো রব। থিম বনাম সাবেকিয়ানার ঠান্ডা যুদ্ধ নতুন নয়। তবে সবার উপর পুজোর আনন্দ। কলকাতার পাশাপাশি থিমের লড়াই আশেপাশের জেলাগুলিতেও। প্রত্যেক বছর জিরাট সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির থিমের ওপর নজর থাকে গোটা জেলার। এই বছর তারা অযোধ্যার রাম মন্দির থিমকেই বেছে নিয়েছে।
মণ্ডপে থাকবেন দশভূজা। তবে চারপাশে থাকবে রাম, সীতা, হনুমানের মূর্তি। এই মণ্ডপের চূড়ার সজ্জার দিকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নজর। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এই মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে।
মণ্ডপ শিল্পী তপনকুমার পাত্র বলেন, 'অযোধ্যার রাম মন্দির বিরাট জায়গা নিয়ে তৈরি। কিন্তু আমরা এতটা জায়গা পাইনি। গোটা মণ্ডপেই ফাইবারের কাজ থাকবে। চারপাশে থাকবে রামের মূর্তি।' এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা নীলাদ্রি মণ্ডল বলেন, 'অনেকেই রাম মন্দির দর্শন করতে চান। কিন্তু দূরত্ব এবং খরচের কারণে তাঁরা অযোধ্যা যেতে পারেন না। তাঁদের কথা চিন্তা করেই আমরা এই থিম রেখেছি যাতে নিজের জেলাতেই তাঁরা রাম মন্দির দেখতে পান।' প্রতি মুহূর্তে মণ্ডপের রং বদল হবে আলোর খেলায়, জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বাজেট ধরা হয়েছে ৬০ লাখ টাকা।
চলতি বছর জানুয়ারি মাসে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন হয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। যদিও বিজেপি বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাম মন্দির উদ্বোধন 'মোদী সরকারের সাফল্য' বলে দাবি করে। যদিও লোকসভা নির্বাচনে ফৈজাবাদ যেখানে অযোধ্যার রাম মন্দির অবস্থিত সেখানে হার হয় বিজেপির।
সব মিলিয়ে রাম মন্দিরের সঙ্গে দীর্ঘ দশকের রাজনৈতিক টানাপোড়েন সম্পর্কযুক্ত। যদিও হুগলির এই পুজো উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, রাজনীতির সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই। দর্শকদের মন শিল্প ও থিমের মাধ্যমে জয় করা, তাঁদের আনন্দ দেওয়াই লক্ষ্য।