• ‘দু’পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, শেষ হোক স্নায়ুযুদ্ধ’, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক্তারদের বৈঠক চান নির্যাতিতার বাবা
    আনন্দবাজার | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সোমবার বিকেল ৫টায় জুনিয়র ডাক্তারদের কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটা তাদের পঞ্চম এবং শেষ বারের চেষ্টা। মুখ্যসচিবের কাছ থেকে এই মর্মে ইমেল পাওয়ার পর আন্দোলনরত ডাক্তারদের জেনারেল বডির বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানেই এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে এ বার মুখ খুললেন আরজি কর হাসপাতালে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা। জানালেন, তিনি চান মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডাক্তারদের বৈঠক হোক এবং দু’পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।

    সোমবার সংবাদমাধ্যমকে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমরা চাই দু’পক্ষেরই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। সরকার এবং ডাক্তারদের মধ্যে এই স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হোক। যারা আন্দোলন করছে, তারা আমার ছেলেমেয়ের মতো। আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ওরা। আমরা চাইছি, এই সমস্যার কিছু একটা সমাধান বেরিয়ে আসুক। মুখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছতার সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুন। ডাক্তারদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হোক। আমরা এটাই চাই।’’

    আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছেন। তাঁরা সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে গত সাত দিন ধরে ধর্না চালাচ্ছেন। এর আগে চার বার ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। তাঁদের নবান্নে ডাকা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার দাবি করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাতে সরকার রাজি হয়নি। পরে শনিবার দুপুরে সল্টলেকে ধর্নাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। সেখান থেকে তাঁদের কাজে ফেরার আহ্বান জানান। পরে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের ডাকা হয় কালীঘাটে। কিন্তু সে দিনও সরাসরি সম্প্রচার এবং বৈঠকের ভিডিয়োগ্রাফির দাবিতে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। দু’টি শর্ত ছেড়ে দেওয়ার পরেও বৈঠক করতে চায়নি সরকার, অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের। তাঁরা আবার সল্টলেকে ধর্নাস্থলে ফিরে গিয়েছিলেন। তাঁদের সোমবার আবার ডাকা হল বৈঠকের জন্য। এ বার সরকারের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার বা ভিডিয়োগ্রাফি হবে না। লিখিত কার্যবিবরণী দেওয়া হবে, যাতে দু’পক্ষের সই থাকবে।

    এর আগে শনিবারই আরজি কর-কাণ্ডে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। এ প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই পুলিশকে বার বার বলেছিলাম, এখনই দেহ দাহ করতে চাই না। সংরক্ষণ করতে চাই। কিন্তু পুলিশ আমাদের কথা শোনেনি। আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। ৩০০ পুলিশের সঙ্গে আমরা বাড়ির দু’-তিন জন লোক কী করে পেরে উঠব? এখন টালা থানার ওসিকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। নিশ্চয়ই তারা কোনও প্রমাণ পেয়েছে, তাই এই গ্রেফতার।’’

    মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের উপর আমাদের ১০০ শতাংশ ভরসা আছে। সিবিআইয়ের উপরেও ভরসা আছে। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)