কেন এমন স্কুল? দিজেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, এতটাই গরিব পরিবারে তাঁর জন্ম হয়েছিল যে উচ্চ মাধ্যমিকের আগে তাঁর কোনও জুতো ছিল না। অন্যের সাহায্য নিয়েই পড়াশোনা করা। বিশেষ করে মামাদের। পয়সার অভাবে পড়াশোনা না করতে পারার জ্বালাটা খুব ভালো ভাবেই বোঝেন দিজেন্দ্রনাথবাবু। তাই ২০০৮ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পরও অবসর নেননি তিনি। এলাকা ঘুরে তহবিল সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে স্কুল গড়তে প্রয়োজনীয় অনুমতি আদায় করেন তিনি। অবশেষ ২০১৪ সালে গ্রামে একটি স্কুল গড়েন খড়ের ছাউনির। ২৯টি শিশুকে নিয়ে শুরু হয় স্কুলের পথচলা। দ্বিজেন্দ্রনাথ বাবুর ডাকে সাড়া দিয়ে গ্রামের ৩ জন শিক্ষিত বেকার স্কুলে পড়াতে শুরু করেন। শুরু দিকে তাঁকে কখনও কখনও স্কুলের গেট খুলতে হয়েছে, বাজাতে হয়েছে ঘণ্টা। কিন্তু লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছেন। খড়ের ঘর এখন হয়েছে কংক্রিটের ঘরে। পড়ুয়ার সংখ্যা ২৯ জন থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪৬ পিছিয়েপড়া শিশুরা এখন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে। এদিকে, স্কুলের উন্নতি হলেও শিক্ষকরা এখন অন্ধকারেই। গত ১০ বছর কোনও বেতন পাচ্ছেন না তাঁরা। দিজেন্দ্রনাথবাবু বলেন, সরকার যদি এদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে ভালো হয়।
স্কুলটি বর্তমানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে। মিড ডে মিলও চালু হয়েছে। দ্বিজেন্দ্রনাথবাবুর দিকে তাকিয়ে স্কুলে পড়াচ্ছেন তিন জন শিক্ষিত বেকার। তাদের এখন কী হবে, সেটাই চিন্তার বিষয় দ্বিজেন্দ্রনাথ বাবুর কাছে। দ্বিজেন্দ্রনাথ বাবু সংবাদমাধ্যমে বলেন, নানা প্রতিকূলতা সামলে স্কুল হল, মিড-ডে মিল হল, পড়ুয়ারা সরকারি প্রকল্পের সুবিধাও পেল। কিন্তু শিক্ষক ছাড়া কি আর স্কুল চলে! স্থানীয় যুবক-যুবতীরা আর কত দিন বেগার খাটবেন? জানি না, স্কুলটাকে আর বাঁচিয়ে রাখতে পারব কি না।