এই সময়: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন প্রসঙ্গে টালিগঞ্জের এক অভিনেত্রীর মন্তব্য ঘিরে কুণাল ঘোষের পোস্ট তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন তুলেছে। একই সঙ্গে সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষকে নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন এই সাংসদের মন্তব্যের জেরে নয়া বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে গিয়ে গত শনিবার মৌসুমী ভট্টাচার্য নামে এই অভিনেত্রী তৃণমূল নেতৃত্বর তীব্র সমালোচনা করেন। তৃণমূলের আইটি সেলের দায়িত্বপ্রান্ত দেবাংশু ভট্টাচার্য ও কুণালকে আক্রমণ করেন তিনি।সামাজিক মাধ্যমে মৌসুমীর যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সেখানে তিনি বলেছেন, ‘কুণাল ঘোষ এবং দেবাংশুকে পাবলিক যে দিন হাতে পাবে, কে বাঁচাবে ওদের দেখব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু বাঁচাতে আসবে না। ঘরে বসে প্রেসের সামনে বড় বড় লেকচার দেয়। একদিন না একদিন পাবলিকের সামনে আসতে তো হবেই ভাই। একদিন না একদিন ডাক্তারের সামনে তো পড়তেই হবে। অসুস্থ সবাই হয়।’ যদিও ‘এই সময়’ এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
এই ভিডিয়োকে নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে সোমবার কুণাল লেখেন, ‘হ্যাঁ-রে দেবাংশু, তোর পাত্রী দেখার কাজটা এগোব? তোর সঙ্গে বেশ মানাবে। রাগের মধ্যেই থাকে অনুরাগের বীজ। তা ছাড়া কেমন সংস্কার মানে, স্বামীর নাম মুখে আনতে চায় না। আমার তো নিজেকে এখনই ভাসুর ভাসুর লাগছে।’
কুণালের এই পোস্টের পর দেবাংশু ফেসবুকে লেখেন, ‘গলা শুনে মনে হচ্ছে বড় দজ্জাল। টিকবে কি? বিনয় কোঙারের মতো ‘লাইফ হেল’ করে দেবে তো। এ বাবা দাঁড়াও দাঁড়াও। বিবাহিত তো! সিরিয়ালে কাজ নেই, ডাক্তারদের আন্দোলনে বিরিয়ানি খেতে গিয়েছে।’
কুণাল-দেবাংশুর এই পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নেটিজ়েনরা। এ ভাবে এক মহিলাকে নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার এই ধরনের মন্তব্য অপমানজনক বলে মনে করছেন অনেকে। তৃণমূলের অন্যতম মহিলা মুখ তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘সোশ্যাল মিডিয়াতে কে কাকে কী বলেছেন, তা আমি জানি না। তর্ক-বিতর্ক হতে পারে। বিরুদ্ধ মত থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ করা উচিত নয়। যিনি এমন মন্তব্য করেছেন, তার দায় তাঁকেই নিতে হবে। যদি কেউ মনে করেন তাঁর সম্মানহানি হয়েছে, তিনি আইনের পথেও যেতে পারেন।’
নেটিজ়েনরা কুণালের তীব্র সমালোচনা করলেও তিনি নিজের যুক্তিতে অনড়। তাঁর কথায়, ‘যখন এক মহিলা প্রকাশ্যে আমাকে, দেবাংশুকে মারার কথা বলেন, ডাক্তারদের দিয়ে চিকিৎসা না-করানোর হুমকি দেন, তখন সেটা নাকি বাক্যালাপ! আমরা পাল্টা হাল্কা রসিকতা দিয়ে জবাব দিলে সেটা তখন পুরুষতান্ত্রিক! মহিলাদের সম্মান করা এদের কাছ থেকে শিখব না।’
শতরূপকে ইঙ্গিত করেও এ দিন কুণাল একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। হাতে একটি জ্যান্ত ইঁদুর রয়েছে, এমনই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে কুণাল লিখেছেন, ‘নাম রাখছি শতরূপ।’ কুণালের এই পোস্টের কিছুক্ষণ পরেই শতরূপ কুণালের এই পোস্টের স্ক্রিন-শট তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেন। সঙ্গে লেখেন, ‘ধন্যবাদ কুণালদা, মুক্ত ইঁদুরটি নাম শতরূপ রাখার জন্য। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ পাশের জেলবন্দি খরগোশটার নাম রাখলাম কুণাল ঘোষ।’
ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্ত গ্রেপ্তার হওয়ার পরে রবিবার কুণালকে কাঠগড়ায় তুলে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন শতরূপ। তারই প্রতিক্রিয়ায় কুণাল এই ইঁদুরের ছবি পোস্ট করেছেন বলে বামেদের পর্যবেক্ষণ। পুলিশি হেফাজতে থাকা কলতানের মুক্তির দাবিতে এ দিন হেদুয়া থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত বড় মিছিল করে বামেরা।