‘আমার দুই মেয়ে, কষ্টটা বুঝি’, বলছেন ধৃত পুলিশ অফিসারের স্ত্রী
এই সময় | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এই সময়: সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পরে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বাড়িতে হাজির হলেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গত শনিবার ওসিকে গ্রেপ্তারের পরে পুলিশ মহলের নিচুতলার একাংশের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।লালবাজারের কর্তাদের ভূমিকা নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন তাঁরা। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ক্ষোভ উগরে দেন। এরপরেই পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে তড়িঘড়ি নেমে পড়ে লালবাজার।
সোমবার দুপুরে অভিজিৎ মণ্ডলের সার্ভে পার্কের বাড়িতে গিয়ে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (চতুর্থ) ভি সলমান নেসাকুমার বলেন, ‘পরিবারের সঙ্গে আছি। এই পরিস্থিতিতে আমরা সবরকমের সহযোগিতা করব। আমার ব্যক্তিগত মত, টালা থানার ওসির কোনও দোষ নেই। ওখানে চিকিৎসক-সহ যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের মত নিয়েই ওসি কাজ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বিষয়, তাই বেশি আর কিছু বলব না। তবে টালা থানার ওসি নিজের সেরাটা দিয়েছেন বলে আমি মনে করি।’
এই ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘একজন পদস্থ কর্তা কী করে বলতে পারেন ওসির দোষ নেই, তা হলে কি তিনি মেনে নিচ্ছেন পুলিশ কারও নির্দেশে সেদিন কাজ করেছিল?’
সোমবার দুপুরে অভিজিতের বাড়িতে যান কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (চতুর্থ) ভি সলমন নেসাকুমার, ছাড়াও ডেপুটি কমিশনার (এসএসডি) বিদিশা কলিতা এবং ডেপুটি কমিশনার (ইস্ট ডিভিশন) আরিশ বিলাল। অভিজিতের স্ত্রী সঙ্গীতা মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করার পরে পুলিশ কর্তারা তাঁকে বলেন, ‘অভিজিৎ ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে যা করার করেছেন। ওর কোনও দোষ নেই।’ পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সঙ্গীতা বলেন, ‘ওঁরা পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।’
সিবিআই ইতিমধ্যেই আদালতে দাবি করেছে, আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে যুক্ত। রবিবার শিয়ালদহ আদালতে অভিজিৎ-কে পেশ করার সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন সাব ইনস্পেক্টর এবং ওসি। কোনও আইপিএস কর্তাকে আদালতে দেখা যায়নি। যা নিয়ে বাহিনীর নিচুতলার একাংশের মধ্যে ক্ষোভের কথা কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কানেও পৌঁছে যায়।
এরপর ওসিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সোমবার দুপুরে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দপ্তরে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সঙ্গীতাও বলেন, ‘ওঁর শরীর ভাল নেই। তবে তদন্তে সহযোগিতা করছেন। মনে হচ্ছে তদন্তটা অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। আমার স্বামী খুব কষ্ট করেছেন, যাতে নির্যাতিতা বিচার পান। আমারও দু’টো মেয়ে আছে, আমি কষ্টটা বুঝি।’