• এফআইআরে অনেক দেরি, সঙ্গতি নেই অভিজিৎ-সন্দীপের বয়ানেও
    এই সময় | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় আজ, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করতে চলেছে সিবিআই। এদিনই শিয়ালদহ আদালতে ধৃত টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে পেশ করা হবে। তার আগে সোমবার দু’জনকে সিজিও কমপ্লেক্সে দফায় দফায় জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, দেহ উদ্ধারের পরে কেন ১৪ ঘণ্টা দেরিতে এফআইআর করা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিজিৎ এবং সন্দীপের বয়ান দু’রকম বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে সকাল ১০টা ৩মিনিটে হাসপাতাল থেকে টালা থানায় ফোন গিয়েছিল। এরপর লালবাজারকে বিষয়টি জানানো হয়।

    কিন্তু, থানা থেকে ৫ মিনিট দূরত্বের আরজি করে যেতে কেন ১ ঘণ্টা লেগে গেল, তিনি কি কারও নির্দেশের অপেক্ষা করছিলেন, সে বিষয়ে জেরা করা হলেও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি টালা থানার প্রাক্তন ওসি। সিবিআইয়ের দাবি, সন্দীপের সঙ্গে অভিজিতের ফোনে কথাবার্তার বিষয়টিও এই তদন্তের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

    দু’জনের মধ্যে সেদিন কতবার, কতক্ষণ ধরে কথা হয়েছিল তার ডিটেলস ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের হাতে চলে এসেছে। সেই তথ্য সামনে রেখে এদিন দু’জনকে মুখোমুখি বসানো হয়। এ সংক্রান্ত কিছু বিষয় জানতেও চাওয়া হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, তরুণীর দেহ উদ্ধারের পরে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক পরীক্ষায় যৌন নির্যাতনের বিষয়টি বুঝতে পারেন। তার পরেও হাসপাতালের তরফে লিখিত অভিযোগ জানাতে প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরি হয়েছিল।

    অন্যদিকে, ময়নাতদন্তের পরেও ইউডি (আন ন্যাচারাল ডেথ) কেস লেখা হয়েছিল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ। সবকিছুতেই কেন এত দেরি, তা জানতে চাওয়া হলে দু’জনের বক্তব্যে পরস্পর বিরোধী তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সে কারণে অভিজিৎকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ওই থানার আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান গোয়েন্দারা।

    সিবিআই রবিবার শিয়ালদহ আদালতে পেশ করা রিপোর্টে দাবি করেছিল, পরিবার চাইলেও দ্বিতীয়বার ময়না তদন্ত করতে দেয়নি পুলিশ। সোমবার এ বিষয়ে নির্যাতিতার মা বলেন, ‘আমরা মেয়ের দেহ সংরক্ষণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আধিকারিকরা চেয়েছিলেন, দেহ তাড়াতাড়ি যেন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আমাদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করেছিল টালা থানার পুলিশ। প্রবল চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করতে হয় আমাদের। কারণ, প্রায় ২০০-৩০০ পুলিশ কর্মী ছিলেন সেখানে। আর আমরা ছিলাম সংখ্যায় ৩-৪ জন।’

    তাঁর আরও অভিযোগ, ‘ক্রাইম সিনও বদলানো হয়েছিল। মেয়ের দেহ যেখানে রাখা হয়েছিল, ওখানে এই ঘটনা ঘটেনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, প্রশাসন এতে সকলের ভূমিকা রয়েছে।’ নির্যাতিতার বাবার প্রশ্ন, ‘পুলিশ বলছে মেয়েকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পেয়েছিল, তা হলে আমাদের তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলো কেন?’ আপাতত এসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই।
  • Link to this news (এই সময়)