• জুনিয়র ডাক্তারদের হুঁশিয়ারি সিদ্দিকুল্লার
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, মন্ত্রী উদয়ন গুহ সহ একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর পর এবার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করার ধারা চলছেই। সোমবার বহরমপুরে সিদ্দিকুল্লা সাহেব বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে এমন কাজ করছেন আন্দোলনকারীরা। পিছনে রাজনৈতিক মদত রয়েছে। তাই এত বাড়াবাড়ি করছনি জুনিয়র ডাক্তাররা। লাটসাহেবি কায়দায় আন্দোলন করছেন।’ মন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ‘হুঁশিয়ারি’ হিসেবেই দেখছেন আন্দোলনকারীরা। তবে, পাল্টা প্রতিক্রিয়ার রাস্তায় হাঁটেননি তাঁরা।   

    আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার প্রভাব পড়েছে। আউটডোরে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। এদিন  বহরমপুরে এসে আন্দোলনরত ডাক্তারদের বিঁধলেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বহরমপুরের সার্কিট হাউসে বসে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রী বলেন, ‘জুনিয়র ডাক্তাররা ভণ্ডামি করছেন, বাড়াবাড়ি করছেন। আন্দোলনকারীদের পিছনে কোনও রাজনৈতিক শক্তি আছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বাস নেই? মাইনে নেওয়ার সময় বিশ্বাস হয়! পদোন্নতির সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস হয়? যাঁরা দ্বিচারিতা করছেন, অন্যায় করছেন। বাংলার মানুষের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবেন না।’

    এদিকে, এদিনও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের আউটডোর কার্যত ফাঁকাই ছিল। অধিকাংশ জুনিয়র চিকিৎসক কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নামঞ্চে বসে রয়েছেন। গ্রাম বাংলার মানুষ দিনের পর দিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মেডিক্যাল কলেজের দিকে পা বা বাড়াচ্ছেন না। গত এক মাসে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে আউটডোরে আসা রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় পঞ্চাশ শতাংশ কমেছে। নদীয়া, বীরভূম ও পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকেও অনেক রোগী চিকিৎসা করাতে বহরমপুরে আসেন। তাঁরা এখন ব্লক হাসপাতাল এবং মহাকুমা হাসপাতালের উপর ভরসা রাখছেন। সেখানে জটিল রোগের চিকিৎসা না পেলেও মুখ বুজে সহ্য করছেন সকলেই। 

    আন্দোলনের জেরে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলেও মেনে নিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ। তিনি এদিন বলেন, ‘জুনিয়র চিকিৎসকরা আউটডোরে চিকিৎসা করছেন না। তাঁরা সকলেই কলকাতার আন্দোলনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এদিন আউটডোর অনেকটাই ফাঁকা ছিল। আমরা সকলেই চাই আর জি করের ঘটনার দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। কিন্তু যেভাবে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে, সেটাও মানতে পারছি না। অথচ, এই পরিস্থিতিতে কাউকে কিছু বলাও যাচ্ছে না।’

    মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল সংলগ্ন এক ওষুধ দোকানদার বলছিলেন, ‘শেষবার করোনাকালে হাসপাতাল চত্বর এতটা ফাঁকা দেখেছিলাম। পরিস্থিতি যে কোন দিকে যাচ্ছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। এই জেলায় এত রোগী, তাঁরা কী আদৌ চিকিৎসা নিতে আসছেন না।’ তবে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, জুনিয়র চিকিৎসকরা অনেকেই কাজে ফিরেছেন। তবে, তাঁরা আউটডোর পরিষেবা দিচ্ছেন না। রোগীর চাপ এখন কম। ইনডোরে অনেক বেডই ফাঁকা পড়ে। সাধারণত মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে এই ছবি দেখা যায় না। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)