• প্রোবায়োটিক প্রয়োগে বাড়ছে মাছের উৎপাদন, পুকুরে বায়োফ্লকে নয়া দিশা
    বর্তমান | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রোবায়োটিক প্রয়োগে বাড়ছে মাছের উৎপাদন। পুকুরে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে দিশা দেখছেন জলপাইগুড়ির মৎস্যচাষিরা। তাঁদের দাবি, উপকারী অণুজীব বা প্রোবায়োটিক ব্যবহারের ফলে মাছের রোগব্যাধি কমছে। উৎপাদন কার্যত দ্বিগুণ হচ্ছে। বাইরে থেকে খাবারও কম প্রয়োগ করতে হচ্ছে। কারণ, বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছের বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য হয়ে ফের পরিণত হচ্ছে খাবারে। ফলে মৎস্যচাষিদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে পুকুরে মাছ চাষের এই নয়া প্রযুক্তি। জলপাইগুড়ি জেলা মৎস্য আধিকারিক অমিত সরকার বলেন, দক্ষিণবঙ্গে মূলত ট্যাঙ্কে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ হচ্ছে। কিন্তু আমরা পুকুরে এই প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছি। এতে খুব ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে।

    পুকুরে বায়োফ্লক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মাছের উৎপাদন বাড়াতে মিলছে সরকারি অনুদান। বায়োফ্লক প্রযুক্তি গড়ে তুলতে খরচের ৪০-৬০ শতাংশ অনুদান মিলছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য আধিকারিকরা।

    জলপাইগুড়ি জেলায় ১৬টি বায়োফ্লক পুকুরের কাজ চলছে। তার মধ্যে আটটি পুকুর তৈরি হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে তৈরি হয়েছে দু’টি বায়োফ্লক পুকুর। কাজ চলছে একটির। ময়নাগুড়িতে হয়েছে দু’টি পুকুর। কাজ চলছে তিনটির। ধূপগুড়ি ব্লকে চারটি বায়োফ্লক পুকুরের কাজ শেষ। তিনটি তৈরি হচ্ছে। রাজগঞ্জে কাজ চলছে একটির।

    মৎস্য আধিকারিকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ পুকুরে সারাবছর জল থাকে না। আবার যখন বৃষ্টি হয়, পুকুর ছাপিয়ে যায়। ফলে বহু টাকা লোকসান হয়ে থাকে মৎস্যচাষিদের। বায়োফ্লক পুকুরের তলায় মোটা পলিথিনের চাদর বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে ভরা গ্রীষ্মেও শুকোচ্ছে না পুকুর। আবার পুকুরের নির্দিষ্ট উচ্চতায় আউটলেট থাকছে। ফলে ভারী বৃষ্টিতে পুকুর ছাপিয়ে গেলে বাড়তি জল আউটলেট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।

    মৎস্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, সব মাছ ফ্লক (প্ল্যাঙ্কটন) খায় না। চিংড়ি ও তেলাপিয়ার ক্ষেত্রে বায়োফ্লক বেশি কার্যকরী। কিন্তু জলপাইগুড়ির মৎস্যচাষিরা জানিয়েছেন, বায়োফ্লক পুকুরে তাঁরা অন্যান্য মাছ চাষ করেও ভালোই লাভ পাচ্ছেন।

    ময়নাগুড়ির টেকাটুলির বাসিন্দা সুকুমার রায় বলেন, আমি মাত্র ৮৫ বর্গফুটের একটি পুকুরে বায়োফ্লক করে জাপানি পুঁটি চাষ করছি। ভালোই লাভ মিলছে। অতটুকু পুকুরে ১৬ হাজার মাছের চারা ছেড়েছি। তাঁর দাবি, এয়ার পাম্পের সাহায্যে বাইরে থেকে অক্সিজেন যোগ করতে হচ্ছে। এয়ারেটর দিয়ে জলে ঘূর্ণি তৈরি করছি। উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে পুকুরে যোগ করতে হচ্ছে গুড়।
  • Link to this news (বর্তমান)