নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ই এম বাইপাসের মাঠপুকুর সংলগ্ন এলাকার অভিজাত ক্লাব। ঝাঁচকচকে গাড়িতে অভিজাত লোকজনের আনাগোনা লেগে রয়েছে। বাইপাসের সার্ভিস রোড লাগোয়া এই ক্লাবের মধ্যে রয়েছে রেস্তরাঁ, গাড়ির শো-রুম, ব্যাঙ্কোয়েট হল, সুইমিং পুল সহ নানা ব্যবস্থা। পাশেই রয়েছে বেসরকারি অফিস, এটিএম, ছোটখাটো দোকান। অথচ এহেন একটি ব্যস্ত এলাকা দিয়ে হেঁটে যেতে গেলে দুর্গন্ধে গা গুলিয়ে উঠছে। কারণ, ক্লাব ও সংলগ্ন চত্বরের নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল দশা।
ফলে নোংরা জল উপচে ভাসিয়ে দিচ্ছে সার্ভিস রোড। এক-দু’দিনের কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, দিনের পর দিন ধরে চলছে এই অব্যবস্থা। দুর্গন্ধেই মালুম হচ্ছে, ক্লাব চত্বর থেকে উপচে আসা নোংরা জল শৌচাগারের চেম্বারের। নাকে রুমাল চাপা দিয়ে কোনওরকমে জায়গাটি পেরচ্ছেন পথচারীরা। তার মধ্যেই কোনও বেপরোয়া গাড়ি বা বাইক বেশি গতিতে বেরিয়ে গেল নোংরা জল ছিটকে পড়ছে পথচারীর গায়ে। বৃষ্টি বেশি হলে জমা জলের সঙ্গে মিশছে সেই নোংরাও। তাতেই পা ডুবিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। কয়েক মাস ধরে এই পরিস্থিতি চললেও না ক্লাব কর্তৃপক্ষ, না পুরসভা—কেউই সমস্যা মেটানোর কথা ভাবেনি বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে এই ক্লাবের লাগোয়া আবাসন থেকে এভাবেই নোংরা জল মাঠপুকুর অটো স্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ভাসিয়ে দিত। স্থানীয়রা এনিয়ে অভিযোগ করলে জানা যায়, ওই আবাসনের নিজস্ব সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) কাজ করছে না। তখন কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তৎপর হওয়ায় সেই সমস্যা মেটে। বর্তমানে সেখান থেকে কিছুটা দূরে একই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে মানুষকে। বাইপাসের এই সার্ভিস রোড ধরে সোজা চলে যাওয়া যায় মেট্রোপলিটন মোড় পর্যন্ত। কিন্তু এই অবস্থা চলতে থাকায় এখন গাড়ি চললেও হাঁটার ক্ষেত্রে এড়িয়ে যাচ্ছেন অনেকে। একটি গাড়ি শো-রুমের কর্মী অলোক কর্মকারের কথায়, ‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটু চা খাওয়ারও জো নেই। গন্ধে টেকা দায়।’
মাঠপুকুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘বৃষ্টি না হলেও নোংরা জল উপচে আসার বিরাম নেই। আর বৃষ্টি হলে তো রাস্তায় পা দেওয়াই যায় না।’ তবে পরিস্থিতি খুব বেগতিক হলে নোংরা জল পাম্প করে রাস্তার অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ নালায় ঢুকিয়ে দেয়। তবে তাতে সমস্যা খুব একটা মেটে না। এ প্রসঙ্গে পুরসভার নিকাশি বিভাগ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। এভাবে শৌচকর্মের জল রাস্তায় বেরিয়ে আসছে, এটা দিনের পর দিন চলতে পারে না।