টানা বৃষ্টিতে কোথাও নদী বাঁধে ধস, কোথাও বন্যা পরিস্থিতি
এই সময় | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিম্নচাপের একটানা বৃষ্টিতে সুন্দরবনের গোসাবার একাধিক জায়গায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হাওড়ার ভাটোরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় শিলাবতী নদীর জলস্তর বেড়ে প্লাবিত ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের আকুই গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেক এলাকা জলমগ্ন। আকুই পোস্ট অফিসের ভেতর হাঁটুর সমান জল। নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।গত তিন দিন ধরে একটানা বৃষ্টির জেরে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। নিম্নচাপের জেরে লাগাতার বৃষ্টির ফলে গোসাবা ব্লকের বালি, পাখিরালয়, সাতজেলিয়া, লাহিড়িপুর, ছোট মোল্লাখালি, কালিদাসপুর, পাঠানখালি এলাকায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। কোনও কোনও এলাকায় বাঁধে ফাটলও দেখা দিয়েছে।
রবিরার রাতেই নদী বাঁধে ধস নামে পাখিরালয় এলাকায়। বাঁধে পলিথিন বিছিয়ে গ্রামে জল ঢোকা আপাতত বন্ধ করা গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সেচ দফতরের গোসাবার আধিকারিক শুভদীপ দালাল জানান, বাঁধের অবস্থা অনেক জায়গাতেই খারাপ রয়েছে। গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়ে বাঁধ মেরামতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোথাও বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে পারেনি।
গোসাবার বিডিও বিশ্বরূপ বিশ্বাস জানান, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। বাঁধ ভেঙে গ্রামে যাতে জল ঢুকতে না পারে সেই চেষ্টা চলছে।
টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে পশ্চিম মোদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় শিলাবতী নদীর জল বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। চন্দ্রকোনা, ঘাটাল ও দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। চন্দ্রকোনা-১ নম্বর ব্লকের মানিককুন্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামে জল ঢোকায় বিপদে পড়েছে ২০০ পরিবার।
অনেক বাড়ির উঠোনে জল। মাটির বাঁধ দিয়ে জল আটকানোর চেষ্টা করছেন গ্রামের লোকজন। জলের তোড়ে রাস্তা ভেঙেছে। জলমগ্ন কৃষি জমি। সময় মতো নদী বাঁধ মেরামতি না হওয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস জানান, প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ বিলি শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন সেচ দফতরের কর্মীরা।
ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হাওড়ার দ্বীপাঞ্চল ভাটোরা। ইতিমধ্যে উত্তর ভাটোরার রাস্তাঘাট-সহ নিচু জমি জলের তলায়। ডিভিসি জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়ালে এবং পূর্ণিমার কোটালে নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেলে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল জানান, ইতিমধ্যে দীপাঞ্চলের কয়েকটি নিচু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে।
পরিস্থিতি সামলাতে ভাটোরায় সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা কাজ শুরু করেছেন। এনডিআরএফকে-ও খবর দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক জানান, নদীতে জলের স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌকা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কথা চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। পঞ্চায়েতগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রিপল ও প্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি ইন্দাস ব্লকের আকুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। আকুই পোস্ট অফিসের ভেতর হাঁটু সমান জল।