TMCP-র লাগাতার চাপে হস্টেল বদল BCKV-তে, ক্লাস শুরুতে ধন্দ
এই সময় | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এই সময়: দীর্ঘ টানাপড়েনের পর তৃণমূলের ছাত্রনেতাদের দাবি মেনে তাঁদের শর্তেই প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হস্টেল বদল হয়ে গেল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার পরেও অবশ্য প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ফিজিক্যাল ক্লাস কবে শুরু হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। গোটা ঘটনাক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হস্টেল জগদীশ আবাসও আতসকাচের নীচে। ওই হস্টেলে আর্থিক অনিয়মের ধারাবাহিক অভিযোগে শাসকদলের সমর্থক পড়ুয়ারাও অনেকে বিরক্ত।মাসখানেক ধরে গোলমালের মধ্যেই কী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র জগদীশ আবাসের আবাসিক দু’টি বর্ষের পড়ুয়া এবং বিদ্যাসাগর আবাসের এমএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন গঠন হলো, সে প্রশ্নও উঠেছে? যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ৪০ শতাংশই ছাত্রী, সেখানে ছাত্র ইউনিয়নে মহিলা প্রতিনিধি না রাখাও বড় ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম সাহা বলেন, ‘নতুন বছরের পড়ুয়াদের পুজোর আগেই হস্টেলে রেখে ফিজিক্যাল ক্লাস শুরুর ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’ হরিণঘাটা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জগদীশ আবাসে রাখতে হবে, এই দাবিতে দু’দিন ধরে টিএমসিপির টানা ঘেরাওয়ের পরে কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে কার্যত আত্মসমপর্ণ করেছেন।
অথচ গত বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রের র্যাগিংয়ে মৃত্যুর পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধমাত্র রমন হস্টেল ও ছাত্রীদের মাতঙ্গিনী হস্টেলে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তায় নজরদারির জন্যে সিসিটিভি বসানো হয়। কিন্তু যে জগদীশ হস্টেল নিয়ে এত অভিযোগ, সেখানে এতদিনেও সিসিটিভি বসানো হয়নি। সে কারণেই এ বার কর্তৃপক্ষ নবাগতদের রমন হস্টেলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
কিন্তু টিএমসিপির চাপে শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে হলো কর্তৃপক্ষকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের ডিন গৌতম চক্রবর্তীর হতাশ মন্তব্য, ‘ছাত্রদের কোন হস্টেলে রাখা হবে, তা একেবারেই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সিদ্ধান্তও ছাত্র সংগঠন নিচ্ছে! মানতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে!’
গত ২৩ অগস্ট রমন হস্টেলে ঢুকে টিএমসিপির একাংশের বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ ওঠে। যে ছাত্রীরা এর বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের হুমকি দেওয়া, তাঁদের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করারও অভিযোগ উঠেছে। যদিও সেই ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া এলাকার তৃণমূল নেতা রাকেশ পারুইয়ের দাবি, ‘কর্তৃপক্ষ ঠিক করুন কবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হস্টেলে এনে ফিজিক্যাল ক্লাস শুরু করবেন।’
তাঁর দাবি, ‘র্যাগিং রুখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হস্টেলে সিসিটিভি লাগানোর দাবি আমরা করেছিলাম। কিন্তু এতদিনেও কেন তা হয়নি তার জবাব দিতে হবে কর্তৃপক্ষকেই।’ জগদীশ হস্টেলে আর্থিক অনিয়ম-সহ অন্য অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘সবটাই মৌখিক, কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ নেই।’ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আর্থিক সমস্যার কারণেই সর্বত্র সিসিটিভি বসানো যায়নি।