এই সময়, কোচবিহার: নদী ভাঙনের জেরে দিশেহারা গ্রামবাসীরা। তলিয়ে যাচ্ছে ভিটেমাটি৷ অভিযোগ, সমস্যা জেনেও একবারের জন্যও গ্রামে আসেননি স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদ। প্রতিবাদে তাঁদের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পোস্টার সেঁটেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।তুফানগঞ্জের ভানুকুমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়ডাক ও সঙ্কোশ নদীর পাড়ে ছিট বড়লাউকুঠি গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় সাঁটানো হয়েছে ওই পোস্টার। লেখা হয়েছে, তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক মালতী রাভা ও আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা নিখোঁজ। তাঁদের দেখতে পেলে নীচে দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করবেন।
মালতী রাভা অবশ্য বলেন, ‘এর আগে অনেকবার ওই এলাকায় গিয়েছি। নদী ভাঙন নিয়ে সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। সাংসদকে নিয়ে শীঘ্রই এলাকায় যাব।’ তাঁর অভিযোগ, ‘রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কারণে গ্রামের এই দুর্দশা।’
সাংসদ মনোজ টিগ্গার অভিযোগ, ‘আরজি করের ঘটনায় তৃণমূল বিপাকে পড়েছে বলে এখন ওসব করাচ্ছে।’ কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছেন, বিজেপিকে ভোট দিয়ে তাঁরা ভুল করেছেন৷ খুব তাড়াতাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষদের সঙ্গে নিয়ে নদী ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে যাব।’
ভানুকুমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে রায়ডাক ও সঙ্কোশ নদী৷ দুই নদীর সংযোগস্থলের এক দিকে ছোট লাউকুঠি, অন্য দিকে বড় লাউকুঠি গ্রাম৷ দুই নদীর সংযোগস্থল কোচবিহারের ভূখণ্ড থেকে আলাদা করেছে বড় লাউকুঠিকে। গ্রামের অন্য প্রান্তে অসমের ধুবড়ি জেলা৷ যে কোনও প্রয়োজনে তুফানগঞ্জে যেতে হলে একমাত্র ভরসা ডিঙি নৌকা। না হলে অসম দিয়েই যাতায়াত করতে হয় নদী ঘেরা এই দ্বীপের বাসিন্দাদের। মাস ছ’য়েক থেকে রায়ডাক ও সঙ্কোশ নদীর গ্রাসে বিপদের মুখে পড়েছেন তাঁরা।
ক্ষতিগ্রস্ত সুরধ্বনি দাস বলেন, ‘কৃষি জমি আগেই তলিয়ে গিয়েছে। এখন মাথা গোঁজার ঠিকানাও নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে। বাড়ি ভেঙে আসবাবপত্র, গবাদিপশু নিয়ে কোথায় যাব? আমরা দিশেহারা৷’ তুফানগঞ্জ মহকুমার সেচ দপ্তরের আধিকারিক সৌরভ সেন বলেন, ‘এই এলাকায় অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করে নদী ভাঙন রোধ করা যায় কিনা সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ অনুমোদন এলে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু হবে।’
ভানুকুমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ধনঞ্জয় বর্মন বলেন, ‘গ্রামটি নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত৷ তুফানগঞ্জ প্রশাসনকে একাধিক বার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নিতে বললেও গ্রামের হাজার তিনেক বাসিন্দাদের কথা কেউ ভাবেননি।’