• মাওবাদীদের ‘ঠান্ডা’ করা মনোজ কলকাতার পুলিশ কমিশনার, বিনীত কোন পদে? আর কী রদবদল?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • কলকাতার নয়া পুলিশ কমিশনার হলেন ‘ক্রাইসিস ম্যান’ মনোজকুমার বর্মা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানির পরেই নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে যে বিনীত গোয়েলের পরে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে ১৯৯৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার মনোজকে বসানো হচ্ছে। এতদিন যিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন, সেই বিনীতকে পশ্চিমবঙ্গের এসটিএফে এডিজি করা হল। যা তাঁর চেনা জায়গা। কারণ আগেও এসটিএফে কাজ করেছেন। অন্যদিকে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনের আবহেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ইনটেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চেও রদবদল করা হয়েছে।  সরিয়ে দেওয়া হয়েছে জাভেদ শামিমকে। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তাকে কার্যত গুরুত্বহীন পদে পাঠিয়ে দিয়েছে নবান্ন। আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে দু'জনকে সরানোর পাশাপাশি আরও কয়েকটি পদে রদবদল করা হয়েছে।

    ১) বিনীত গোয়েল: কলকাতার পুলিশ কমিশনার আছেন। তাঁকে এডিজি করা হচ্ছে। 

    ২) জ্ঞানবন্ত সিং: ডিরেক্টরেট অফ ইকোনমিক অফেন্সের ডিরেক্টর পদে আছেন। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ইনটেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চের এডিজি করা হয়েছে।

    ৩) জাভেদ শামিম: তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ইনটেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চের এডিজির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি পদে বসানো হল। যা রাজ্য পুলিশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ।

    ৪) মনোজকুমার বর্মা: জাভেদ শামিমকে যে পদে পাঠানো হচ্ছে, সেই পদে ছিলেন মনোজকুমার বর্মা। তাঁকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার করা হল।

    ৫) ত্রিপুরারী অথর্ব: যে পদে বিনীতকে পাঠানো হয়েছে, আপাতত সেই পদে আছেন তিনি। তাঁকে ডিরেক্টরেট অফ ইকোনমিক অফেন্সের ডিরেক্টর পদে পাঠানো হল।

    ৬) অভিষেক গুপ্তা: কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদে ছিলেন। তাঁকে যে পদে পাঠানো হয়েছে, সেটাকে ‘পানিশমেন্ট পোস্টিং’ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন অনেকে। তাঁকে ইএফআরের সেকেন্ড ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডাট পদে সরিয়ে দেওয়া হল।

    ৭) দীপক সরকার: শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি পদে আনা হল।

    যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে চলেছেন মনোজ। ১৯৯৩ ব্যাচের আইপিএস অফিসার পীযূষ পান্ডে এবং ১৯৯৭ ব্যাচের আইপিএস অফিসার সুপ্রতিম সরকারের মতো অফিসার দৌড়ে থাকলেও মনোজের উপরে আস্থা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি অতীতে মাওবাদীদের ‘ঠান্ডা’ করেছেন। ‘ঠান্ডা’ করেছেন ব্যারাকপুরকে।

    প্রথমত, আরজি কর কাণ্ডে যেভাবে টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিয়ে পুলিশের নীচু মহলের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলে একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে। ওই মহলের বক্তব্য, আরজি কর কাণ্ডের সময় পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার -র মতো সিনিয়র আইপিএস অফিসাররা ছিলেন। অথচ তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে নেহাতই একজন ওসিকে গ্রেফতার করা হল। মনোজকে সেই ক্ষোভ সামলাতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে। 

    দ্বিতীয়ত, তিন সপ্তাহ পরেই দুর্গাপুজো আছে। ফলে পুজোর আগে প্রস্তুতি সারতে হবে। আর পুলিশের অন্দরে যে আড়াআড়ি বিভাজন তৈরি হয়েছে, সেটা ঠিক করতে হবে তাঁকে।

    জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে স্বাস্থ্য অধিকর্তা কৌস্তুভ নায়েক এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস হালদারকে সরিয়ে দিয়েছেন মমতা। নয়া স্বাস্থ্য অধিকর্তা হলেন স্বপন সোরেন।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)