টানা বৃষ্টিতে ফুল চাষে ব্যাপক ক্ষতি, পুজোর মুখে মাথায় হাত চাষিদের
এই সময় | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা। নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি। তাতেই মাথায় হাত হাওড়ার ফুল চাষিদের। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে ফুল চাষে বলে দাবি তাঁদের। দুর্গাপুজোর সময় কিছুটা বাড়তি উপার্জনের আশায় জল ঢেলে দিয়েছে এই বৃষ্টি বলে দাবি তাঁদের।হাওড়ার বাগনানের বাকুরদহ গ্রামের ফুল চাষিদের কেউ আশা করেছিলেন, পুজোর সময় ফুল বিক্রি করে বাড়ির দোতলাটা করবে। আবার কেউ পরিকল্পনা করেছিলেন, কিছু বাড়তি উপার্জন হলে মেয়ের বিয়ের জন্য ভালো গয়না করে রাখবেন। কিন্তু তাঁদের সব আশায় জল ঢেলে দিল নিম্নচাপের একটানা বৃষ্টি। রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজো। আর তার আগে প্রকৃতির এই খামখেয়ালিপনায় এখন কার্যত মাথায় হাত তাঁদের। চাষিদের মতে, বিশ্বকর্মা পুজো দূরে থাক, বৃষ্টিতে ফুল চাষের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তাতে দুর্গাপুজোয় ফুল বাজারে পাঠানো নিয়ে রাতের ঘুম উড়েছে।
হাওড়া জেলার বাগনানের বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত। এইসব এলাকার ফুল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের পাশাপাশি হাওড়ার মল্লিকঘাট বাজারেও বিক্রি হয়। ফুল চাষিরা সারা বছর ফুল বিক্রি করে উপার্জন করলেও বছরের কয়েকটি বিশেষ সময় অতিরিক্ত মুনাফা উপার্জনের আশায় বসে থাকে। যার মধ্যে জন্মাষ্টমী থেকে কালীপুজো অন্যতম। যদিও এই বছর নিম্নচাপের বৃষ্টি তাঁদের আর্থিকভাবে অনেকটাই ক্ষতি করেছে। নিম্নচাপের একটানা বৃষ্টিতে ফুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ফুল চাষিদের বক্তব্য, ‘অসময়ের এই অতি বৃষ্টিতে গাছের গোড়ায় জল জমে যাওয়ায় গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাবে। শুধু তাই নয় বাজারে যাওয়ার আগেই ফুল কালো হয়ে যাচ্ছে। গাঁদা থেকে দোপাটি জারবেরা সব গাছের ক্ষতি হয়েছে।’ তাঁদের কথায়, শুধু বৃষ্টি নয় এরপর রোদ উঠলেও গাছ জ্বলে নষ্ট হয়ে যাবে। বাকুড়দহ গ্রামের ফুল চাষি পুলক ধারা জানান, গত কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির পাশাপাশি ফুল গাছে যেভাবে ছত্রাকের আক্রমণ হচ্ছে, তাতে ফুল চাষ করে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তিনি জানান, পুজোর সময় একটু ভালো বাজারের আশায় অনেক কিছু করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু আমরা এখনও ভাবতে পারছিনা নিম্নচাপের বৃষ্টি এইভাবে আমাদের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেবে। পুলক ধারার বক্তব্য, ‘বিশ্বকর্মা পুজো তো দূরের কথা, দুর্গা পুজোতেও বাজারে ফুল পাঠাতে পারব কিনা সেটাই এখন ভাবাচ্ছে আমাদের।’