এই সময়: বাংলার সীমানা অনেকটাই পিছনে ফেলে আপাতত আরও পশ্চিমে সরে গিয়েছে নিম্নচাপ। সোমবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার উপর থেকে ঝাড়খণ্ডের দিকে সরতে শুরু করার সময়েও তার শক্তি ছিল যথেষ্ট বেশি। ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের উপরে ছিল। তাই আবহাওয়া বিজ্ঞানের পরিভাষায় তখনও সেটি ‘গভীর নিম্নচাপ’।তবে পরের কয়েক ঘণ্টায় দ্রুত কমে যায় বাতাসের বেগ। ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার থেকে কমে হয় ৪০ কিলোমিটার। ‘গভীর নিম্নচাপ’ তকমা বদলে যায় ‘সুস্পষ্ট নিম্নচাপ’-এ। মঙ্গলবার বিকেলে ওই নিম্নচাপ আরও শক্তি হারিয়ে ‘সাধারণ’ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন আবহবিদরা।
টানা কয়েক দিন বৃষ্টি পরে অবশেষে মঙ্গলবার বেশ কয়েক ঘণ্টা কড়া রোদের দেখা পেল দক্ষিণবঙ্গ। শুক্রবারের আগে দক্ষিণবঙ্গের ১৫টি জেলার কোথাও তেমন টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে আপাতত মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে নিম্নচাপ বাংলা ছেড়ে বিদায় নেওয়ার পরে দফায় দফায় শক্তি কমালেও বাংলা পুরোপুরি রক্ষা পেয়ে গেল বলে মনে করছেন না আবহবিদরা। এর কারণ নিম্নচাপের বর্তমান অবস্থান।
ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তিসগড়ের উপর এখনও ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি রেখেছে মৌসম ভবন। ঝাড়খণ্ডে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলে স্থানীয় প্রশাসন বাধ্য হবে বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছাড়তে। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। এই তালিকায় রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা।
পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মিটিওরোলজির (আইআইটিএম) তথ্য বলছে, নিম্নচাপের প্রভাবে কলকাতা ও লাগোয়া অঞ্চল ১৩ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনে ১৫৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টি পেয়েছে। এই নিম্নচাপের দৌলতেই বৃষ্টির বিপুল ঘাটতি অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বাংলা। আইআইটিএম জানিয়েছে, ১ জুন থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত বাংলা গড়ে ১০৪৮.১ মিমি বৃষ্টি পায়। এ বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলা ১০৫৪.৩ মিমি বৃষ্টি পেয়েছে। এই মরশুমে এই প্রথম বাংলা বর্ষার ঘাটতি পার করতে পারল।