নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ইংরেজদের ফেলে যাওয়া বাষ্পচালিত রোলার। বয়স পেরিয়েছে দেড়শো বছর। কিন্তু এখনও অবহেলার ছাপ পড়েনি শরীরে। যাদের তত্ত্বাবধানে সেটি রয়েছে, সেই পূর্তদপ্তর ‘ভালোবেসে’ নাম রেখেছে ‘স্টিম সাহেব’। যন্ত্রের দেবতা বিশ্বকর্মার পুজোর দিনে জলপাইগুড়িতে পুজো পেল সেই ‘স্টিম সাহেব’ও। ভক্তিভরে পুজো দিয়ে তার দীর্ঘায়ু কামনা করলেন পূর্তদপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা।
স্বাধীনতার অনেক আগে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের জন ফাউলার অ্যান্ড কোম্পানির তৈরি এই স্টিম রোলারটিকে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়িতে। দেখতে অবিকল রেলের ইঞ্জিনের মতো। একসময় বেলচা দিয়ে কয়লা তুলে দেওয়া হতো ইঞ্জিনের মাথায়। আর তারপরই হুইসেল ছেড়ে বাষ্প তুলে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলত ‘স্টিম সাহেব’।
পূর্তদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তপন প্রামাণিক বলেন, স্বাধীনতার পর দেশ ছেড়ে চলে যায় ইংরেজরা। কিন্তু তাঁরা ফেলে রেখে যায় এই স্টিম রোলারটি। রাখা ছিল তিস্তাপাড়ে জুবিলি পার্কের পাশে পূর্তদপ্তরের অফিসে। ১৯৬৮ সালে জলপাইগুড়িতে ভয়াবহ বন্যায় পলির নীচে চাপা পড়ে যায় সেটি। পরে পূর্তদপ্তরের কর্মীরাই পলি সরিয়ে উদ্ধার করেন স্টিম ইঞ্জিনটি।
পূর্তদপ্তরের আরএক কর্মী পরিতোষ পাল বলেন, প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ফুল, মালা, চন্দনের ফোটায় সাজিয়ে তোলা হয় স্টিম সাহেব’কে। কাঁসর-ঘণ্টা বাজিয়ে তাকে পুজো করা হয়। পুরোহিত তার মাথায় এঁকে দেন মঙ্গল তিলক।
পূর্তদপ্তরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার অমিত রায় বলেন, বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই স্টিম রোলার। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে এর বিষয়ে জানতে পারে, সেজন্য এটিকে অনেক যত্ন করে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।