• ‘মদ্যপ’ চিকিৎসক, গাফিলতিতে রোগী মৃত‌্যুর অভিযোগ সাগর দত্তে
    বর্তমান | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: হাসপাতালে মদ্যপ অবস্থায় ডিউটি ও তার জেরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উত্তেজনা ছড়াল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে। মৃতের নাম প্রশান্তকুমার সাউ (৪৯)। পরিবারের অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তিনি মৃত্যুর কারণও ঠিকমতো লিখতে পারছিলেন না। পাশে থাকা মহিলা চিকিৎসক তাঁকে বানান বলে দিচ্ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই চিকিৎসক। তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের পাল্টা প্রশ্ন, অসুস্থ চিকিৎসক কেন ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা করছিলেন। তাঁর গাফিলতির কারণে মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুর দায় কে নেবে? 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রশান্তবাবুর বাড়ি টিটাগড় তালপুকুর এম্পায়ার জুটমিলের ১ নম্বর লাইনে। তিনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। সোমবার বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গভীর রাতে প্রবল জ্বর, কাঁপুনি ও সুগার লেবেল বেড়ে যাওয়ায় রক্ত দেওয়া বন্ধ করতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রেফার করায় মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিট নাগাদ সাগর দত্ত মেডিক্যালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, ইমার্জেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এই অবস্থায় প্রশান্তবাবুর মৃত্যুর খবর ঘোষণা হতেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। হাসপাতালের মধ্যে রোগীর পরিবার হইচই শুরু করে। দ্রুত হাসপাতাল আউটপোস্টের পুলিস ও কামারহাটি থানার পুলিস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

    পুলিস ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে নিয়ে যায়। সেখানে মৃতের পরিবারকেও ডেকে নিয়ে গিয়ে দু’পক্ষের সঙ্গে হাসপাতাল সুপার কথা বলেন। পরে চিকিৎসকের সিটি স্ক্যান সহ অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়। তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় নেশাগ্রস্ত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের ছেলে রোহিতকুমার সাউ বলেন, ইমার্জেন্সিতে আনার পর বাবার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর একটি ইসিজি করা হয়। আর কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। বাবাকে ফেলে রাখা হয়েছিল। ইসিজি রিপোর্ট এলেও চিকিৎসক তা পড়তে পারছিলেন না। এমনকী হাসপাতালের কাগজে কিছুই তিনি লিখতে পারছিলেন না। তিনি মদ্যপ ছিলেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেন, উনি অসুস্থ। একজন চিকিৎসক অসুস্থ অবস্থায় কীভাবে রোগী দেখছেন? আমার বাবার মৃত্যু চিকিৎসার গাফিলতিতে হয়েছে। এর দায় কে নেবে? প্রশ্ন রোহিতের। 

    হাসপাতাল সুপার সুজয় মিস্ত্রি বলেন, সম্প্রতি ওই চিকিৎসককে নৈহাটি থেকে সাগর দত্তে পাঠানো হয়েছে। তিনি সোমবার রাতে ডিউটিতে ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় অসুস্থ (নার্ভাস ব্রেক ডাউন) হয়ে পড়েন। তাই তিনি কোনও কথা বলতে পারছিলেন না। কিছু লিখতেও পারছিলেন না। ওঁর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবার সূত্রে খবর, চিকিৎসকের নার্ভের সমস্যা ছিল। নিয়মিত ওষুধ খেতেন।
  • Link to this news (বর্তমান)