গুজরাতে হোটেল ম্যানেজমেন্টের প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া সিউড়ির এক তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলল পরিবার। দেহ ফিরিয়ে আনতে গুজরাতের প্রশাসন থেকে কোনও রকম সাহায্য করা হয়নি বলেও পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি পরিবার।
পরিবার সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারিতে সিউড়ির মল্লিকগুনোপাড়ার বাসিন্দা পিয়া দাস (২৬) হোটেল ম্যানেজমেন্টের প্রশিক্ষণ নিতে গুজরাতের ভারুচ জেলার দহেজ থানা এলাকার একটি হোটেলে গিয়েছিলেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে পিয়ার মা রেনুকা দাসকে ওই হোটেল থেকে ফোন করে জানানো হয়, পিয়া আত্মহত্যা করেছেন।
বাড়ির লোক হোটেল এবং দহেজ থানায় যোগাযোগ করে সোমবার রাতে পিয়ার দেহ সিউড়িতে ফিরিয়ে আনেন। তাঁদের অভিযোগ, হোটেল কর্তৃপক্ষ এই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছুই জানাতে চাননি। গুজরাত পুলিশও সহযোগিতা করেনি। পিয়ার জামাইবাবু মনোজকুমার দাস বলেন, “১২ সেপ্টেম্বর রাতে হঠাৎই হোটেল থেকে পিয়ার মাকে ফোন করে জানানো হয় যে, পিয়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি ও পিয়ার দাদা ১৩ তারিখ রাতে ওখানে পৌঁছই। আমাদের সঙ্গে অসহযোগিতা করা হয়েছে। প্রথমে মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। মৃত্যুর কারণও জানানো হয়নি।’’
মনোজের দাবি, থানায় গিয়ে এফআইআর করতে গেলে পুলিশ জানায়, হোটেলের তরফে আগেই এফআইআর করা হয়েছে। তাই নতুন অভিযোগের প্রয়োজন নেই। ময়না তদন্তের রিপোর্টও তাঁদের দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কোনও রকমে দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।” পিয়ার দিদি পাপিয়া দাস বলেন, “শেষ কয়েকদিন ধরেই আমার বোনের ফোন বন্ধ ছিল। শরীরও খারাপ ছিল। আমিও হোটেল ম্যানেজমেন্টের প্রশিক্ষণ নিতে রাজস্থানে ছিলাম। পিয়া বলেছিল যে হোটেলে ও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, সেই জায়গাটা ভাল না। ও আমার কাছে বেড়াতে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু হোটেল থেকে আসতে দেয়নি। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না।’’
মনোজ জানান, দেহ ফিরিয়ে আনতে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ আর্থিক সহায়তা করেছেন৷ সিউড়ি থানাকেও বিষয়টি দেখার জন্য বলেছিলেন তিনি৷ থানা ও বীরভূম প্রশাসন সবরকম সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান তিনি৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।’’