দুর্যোগে ঝাড়গ্রাম জেলার বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মঙ্গলবার ছিল বিশ্বকর্মা পুজো। সেই আবহে ৩৮৪ জন রক্তমাংসের ‘বিশ্বকর্মা’র অক্লান্ত চেষ্টায় তা স্বাভাবিক করা গেল।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার তথ্য বলছে, শুক্রবার থেকে সোমবারের মধ্যে জেলা শহর ঝাড়গ্রাম-সহ জেলার ৮টি ব্লকের ৫৫০টি জায়গায় দুর্যোগের জন্য বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে যায়। এর মধ্যে ৪০টি বড় গাছ বিদ্যুৎবাহী তারের উপর ভেঙে পড়েছিল। ৩০টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। জেলার বিস্তীর্ণ অংশে মোট ২,৫০০ মিটার বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ঝুলে পড়েছিল। ঝাড়গ্রাম শহরে ১৫টি জায়গায় তার ছিঁড়েছিল। ঝাড়গ্রাম ব্লকের ৭০টি, জামবনি ব্লকের ৫০টি, সাঁকরাইল ব্লকের ৯০টি, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের ৮৫টি, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ৪০টি, বেলপাহাড়ি ব্লকের ৮০টি, লালগড় ব্লকের ৬০টি ও নয়াগ্রাম ব্লকের ৬০টি জায়গায় বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল।
কয়েক দশক আগেও অবিভক্ত মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম মহকুমায় (এখন মহকুমাটিই পৃথক জেলা) দুর্যোগে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে এক সপ্তাহ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় কাটানোর নজিরও রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা হওয়ার পর বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার পৃথক ঝাড়গ্রাম ডিভিশন ও ঝাড়গ্রাম রিজিয়ন হয়েছে। এখন জেলা শহরে একটি ৩৩/১১ কেভি সাব স্টেশন এবং একটি ১৩২/৩৩/১১ কেভি গ্রিড সাব স্টেশন হয়েছে। জেলার ৮টি ব্লকে আরও দশটি ৩৩/১১ কেভি সাব স্টেশন তৈরি হয়েছে। জেলায় ৮টি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের অধীনে বেসরকারি সংস্থার ২৬৪ জন বিদ্যুৎ কর্মী আছেন। দুর্যোগের কারণে ওই কর্মীদের পাশাপাশি আরও ১২০ জন কর্মী সংখ্যা বাড়ানো হয়। সবাই মিলে কাজ করেন।
গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের রঞ্জিত জানা, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের বংশীলাল মাহাতো, বেলপাহাড়ির বিকাশ পাল, জেলা শহরের সদানন্দ মাহাতোর মত বিদ্যুৎ কর্মীরা জানাচ্ছেন, হেলমেট ও বর্ষাতি পরে বৃষ্টি ও হাওয়ার মধ্যে কাজে সমস্যা হচ্ছিল। দফতরের নির্দেশ ছিল, যত দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হবে। ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যুৎ কর্মী সদানন্দ মাহাতোর কথায়, ‘‘সোমবার খবর আসে একটি বহুতলের মিটারে জল ঢুকে বিপজ্জনক পরিস্থিতি হয়েছে। সেখানে গিয়ে মিটার সারানো হয়।’’ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ঝাড়গ্রামের ডিভিশনাল ম্যানেজার মৌমিত মাজি বলছেন, ‘‘অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়ায় দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করাটা বিদ্যুৎ কর্মীদের কাছে চ্যালেঞ্জের ছিল। তাঁরা সফল। মঙ্গলবারও মেরামত চলেছে।’’