• আজই বৈঠক চেয়ে নবান্নে ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের, এখনই উঠছে না কর্মবিরতি
    আনন্দবাজার | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • মঙ্গলবার রাতেই তাঁরা জানিয়েছিলেন। সেই মতো বুধবার সকালে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ইমেল করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই ইমেলে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, তাঁদের দাবির কয়েকটি জায়গা এখনও সমাধান হয়নি। সেই দাবি সমাধানের আশাতেই ইমেল করে আলোচনায় বসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে থাকতে হবে, ইমেলে সে রকম কিছু উল্লেখ করেননি তাঁরা। রাজ্য সরকারের তরফে সদর্থক উত্তর পাওয়ার আশায় তাঁরা।

    আন্দোলনকারীদের পাঠানো ইমেলে মূলত দু’টি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, এত দিন যে পাঁচ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না-অবস্থান করছেন, তার মধ্যে চার এবং পাঁচ নম্বর দাবি এখনও মেটেনি। সেই দাবি নিয়ে বুধবারই মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান বলে জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুধু মুখ্যসচিব নয়, ওই বৈঠকে রাজ্যের গড়া টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের থাকার কথা উল্লেখ করেছেন তাঁরা। তবে ধর্না বা কর্মবিরতি ওঠার বিষয়ে এখনই কোনও স্পষ্ট বার্তা দেননি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘আমাদের ইমেল নিয়ে সরকারের তরফে কী উত্তর আসে, তা দেখার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ ফলে এখনই যে কর্মবিরতি উঠছে না, তা আন্দোলনকারী ডাক্তারদের কথায় এক প্রকার স্পষ্ট।

    আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে ছিল রাজ্যের হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সেই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয় জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছিল সরকারকে। বুধবারের ইমেলে যে দাবিগুলোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে তা হল, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। এ ছাড়াও রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়া এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। অর্থাৎ ‘থ্রেট কালচার’ বন্ধ করতে হবে সরকারকে।

    উল্লেখ্য, গত সোমবার নিজেদের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁরা বলেন, ‘‘আলোচনা সদর্থক।’’ তার কিছু ক্ষণ পরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন, আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে চিকিৎসকদের দাবি মেনে সিপির পদ থেকে মঙ্গলবারই সরানো হচ্ছে বিনীত গোয়েলকে। শুধু তা-ই নয়, ডাক্তারদের দাবি মেনে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকেও অপসারণ করা হচ্ছে। তিন জনকেই অন্য পদে দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেই মতো মঙ্গলবারই বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার।

    মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরেও কর্মবিরতি তুলতে নারাজ জুনিয়র ডাক্তারেরা। দাবি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান তাঁরা। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে জুনিয়র ডাক্তারেরা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে তাঁরা জানিয়ে দেন, চতুর্থ এবং পঞ্চম দফা দাবি এবং স্বাস্থ্যসচিবকে নিয়ে তাঁদের যে দাবি ছিল, তা নিয়ে ফের আলোচনায় বসতে চান। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। বুধবার সকালের মধ্যে লিখিত দাবিপত্র পাঠানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে। সেই মতো বুধবার সকালে মুখ্যসচিবকে ইমেল করে বৈঠকে বসতে চাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তবে সেই ইমেলে স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগের বিষয়টি উল্লেখ করা নেই।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)