মডেল প্রশ্নের সঙ্গে মিলছে না নম্বর বিভাজন, বিপাকে একাদশের পড়ুয়ারা
আনন্দবাজার | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
উচ্চ মাধ্যমিকের মডেল প্রশ্নের নম্বর বিভাজনের সঙ্গে পাঠ্যক্রমের বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের নম্বর বিভাজনের বেশ কিছু জায়গায় মিল নেই। এমনই অভিযোগ একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের একাংশের। অভিযোগ, এর ফলে চরম বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। তাদের একাংশ জানাচ্ছে, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পাঠ্যক্রম তৈরি করেছিল। সেই পাঠ্যক্রমে প্রতিটি বিষয়ের এক-একটি পরিচ্ছেদ থেকে কত নম্বরের প্রশ্ন আসবে, তা-ও বলা ছিল। কিছু দিন আগে মডেল প্রশ্ন প্রকাশ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। অভিযোগ, তাতে দেখা যাচ্ছে, কিছু বিষয়ে প্রথমে প্রকাশিত পাঠ্যক্রমে যে নম্বর বিভাজন দেওয়া হয়েছিল, মডেল প্রশ্নে তা নেই। এর ফলে বিভ্রান্তিতে পড়েছে পরীক্ষার্থীরা।
শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে, কোনও বিষয়ের বিশেষ একটি পরিচ্ছেদ থেকে হয়তো তিন নম্বরের প্রশ্ন আসবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মডেল প্রশ্নে দেখা গিয়েছে, ওই পরিচ্ছেদ থেকে এসেছে আট নম্বরের প্রশ্ন। পড়ুয়ারা তা হলে কোনটা অনুসরণ করবে? তারা জানাচ্ছে, সব থেকে বেশি বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং শিক্ষা বিজ্ঞান নিয়ে। ওই দু’টি বিষয়ের মডেল প্রশ্নে নম্বর বিভাজন নিয়ে বিভ্রান্তি তো আছেই, এমনকি, পাঠ্যক্রমের বাইরে থেকেও কিছু প্রশ্ন মডেল প্রশ্নে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দর্শনশাস্ত্রেও মডেল প্রশ্নে পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন কাঠামো মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছে, এমনিতেই সিমেস্টার পদ্ধতিতে পুরোটাই নতুন পাঠ্যক্রম। একাদশ শ্রেণির নতুন বই আসতে একটু দেরি হয়েছে। এর পরে যদি আবার মডেল প্রশ্ন ঘিরে এমন বিভ্রান্তি ছড়ায়, তা হলে তারা কী ভাবে প্রস্তুতি নেবে? প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষায় কিছু বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এর পরে দ্বিতীয় সিমেস্টারের পড়াশোনা শুরু হবে। এখনই সংশোধন করা না হলে খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়বে পড়ুয়ারা।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বই প্রকাশ করে, এমন কয়েকটি অগ্রণী প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধারেরা জানান, তাঁরা যে পাঠ্য বই প্রকাশ করেন, তাতে প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে মডেল প্রশ্ন থাকে। সেই মডেল প্রশ্ন কেমন হবে, তা নিয়ে তাঁরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদকে প্রায় এক মাস আগে জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখনও সদুত্তর পাননি।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এই ভুলের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘কয়েকটি বিষয়ে মডেল প্রশ্নের সঙ্গে পাঠ্যক্রমের নম্বর বিভাজনের অমিল রয়েছে। বিষয়টি আমরা ভাল করে পরীক্ষা করে দেখছি। এটা দ্রুত সংশোধন করে নেব।’’ এ দিকে, চিরঞ্জীব জানান, এখন প্রথম সিমেস্টার চলছে। কয়েকটি স্কুলের কিছু পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশের কম থাকায় তারা প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষায় বসতে পারেনি। দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষার সময়ে তাদের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা দিয়ে নিতে হবে।